নারীদের হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ ও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুই ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহায় স্কুল-কলেজ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাতিল করে বিল পাস করেছে মধ্য এশিয়ার মুসলিমপ্রধান দেশ তাজিকিস্তান। একইসঙ্গে ছোটদের মাঝে প্রচলিত ঈদ সালামি সংগ্রহের নিয়মও বাতিল করা হয়েছে। এসব আইন অমান্য করলে রয়েছে মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ মজলিশি মিলিতে পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হয়। এর আগে গত ৮ মে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ মজলিশি নামোইয়ানদাগনে পাস হয়েছিল বিলটি। খবর মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ ও ইন্ডিয়া টুডের।
উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তে ‘দেয়াল’ তুলছে উত্তর কোরিয়া!উত্তেজনার মধ্যেই সীমান্তে ‘দেয়াল’ তুলছে উত্তর কোরিয়া!
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের বিলটি পাসের পর এক মসলিশি মিলির প্রেস সেন্টার থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হিজাব বা এই জাতীয় মস্তকাবরণ পরিধানের সংস্কৃতি মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি হয়েছে। এটি তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতি নয়। তাছাড়া এই পোশাকটির সঙ্গে কট্টরপন্থার সম্পর্ক রয়েছে। কেউ যদি আইন অমান্য করে, তাহলে শাস্তি হিসেবে মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে বিলটিতে।
নতুন আইনের অধীনে, হিজাব বা অন্যান্য নিষিদ্ধ ধর্মীয় পোশাক পরা ব্যক্তিদের ৭ হাজার ৯২০ সোমোনি (প্রায় ৭০০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। কর্মচারীদের নিষিদ্ধ পোশাক পরার অনুমতি দেয় এমন কোম্পানিগুলোকে ৩৯ হাজার ৫০০ সোমোনি (৩ হাজার ৫০০ ডলার) জরিমানা করা হবে। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তা এবং ধর্মীয় নেতারা এই আইন লঙ্ঘন করলে ৫৪ হাজার থেকে ৫৭ হাজার ৬০০ সোমোনি (৪ হাজার ৮০০-৫ হাজার ১০০ ডলার) জরিমানা করা হবে।
প্রতিজ্ঞা রক্ষায় ৩১ মাস পর বিধানসভায় পা রাখলেন নাইডুপ্রতিজ্ঞা রক্ষায় ৩১ মাস পর বিধানসভায় পা রাখলেন নাইডু
২০০৭ সাল থেকে হিজাব, ইসলামি ও পশ্চিমা পোশাকের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান শুরু হয় তাজিকিস্তানে। তার পরের বছরগুলোতে হিজাবের ওপর একপ্রকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা কাজ করছিল দেশটিতে। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি পর্যন্ত করেছিলেন।
মূলত তাজিকিস্তানের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও পোষাকরীতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে তাজিকিস্তানের জাতীয় দিবসে সরকাররের পক্ষ থেকে দেশটির নারীদের মোবাইলে হিজাব এবং পশ্চিমা পোশাক পরিহার করে তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পরার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।
তাজিকিস্তানে ২০০৯ সালে ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে তাজিকিস্তানে অন্য যেকোনো ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। ২০০৯ সালের তথ্যানুসারে দেশটির ৯৮ শতাংশ লোক মুসলমান। এদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ সুন্নি এবং ৩ শতাংশ শিয়া মুসলমান। আর বাকি দুই শতাংশের মধ্যে অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও ইহুদি রয়েছে। তাজিকিস্তানের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করতে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোকে নিবন্ধন করতে হয়। এই নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল উপসনার জন্য একত্রিত হতে পারবে না। এর ব্যতিক্রম করলে বড় অঙ্কের জরিমানার পাশাপাশি তাদের উপাসনাস্থল বন্ধ করে দেওয়া হয়।