হইচই, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, বঙ্গবিডিসহ ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম নির্ভর কনটেন্ট প্রকাশ ও পরিবেশনের ওপর তদারকি, নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আদায়ে একটি নীতিমালা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তথ্য সচিব ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে আগামী তিন মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া তৈরি করে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিটিআরসি ও পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
মামলায় বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। রিটের পক্ষে ছিলেন তানভীর আহমেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
রিটকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, গত বছর একটি ইংরেজি দৈনিকে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। সে প্রতিবেদনে বলা হয়, নেটফ্লিক্স বাংলাদেশের গ্রাহকদের কাছ থেকে বছরে ১৮০ কোটি টাকা আয় করে। এ রকম প্ল্যাটফর্ম এখন অনেক আছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করতে পারছে না।
‘তা ছাড়া অনেক ভিডিও কনটেন্ট এসব প্ল্যাটফর্মে ছাড়া হচ্ছে, যা আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না। ফলে এর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সেজন্য একটি নীতিমালা প্রয়োজন। সে কারণে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন’, যোগ করেন রিটকারী।
আদালতের আদেশের পর আইনজীবী রেজা-ই-রাকিব গণমাধ্যমকে বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম তদারকি, নিয়ন্ত্রণ এবং কীভাবে রাজস্ব আদায় করা যায় সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করার জন্য সরকার থেকে যে কমিটি করে দিয়েছে, সে কমিটিকে বলা হয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে খসড়া নীতিমালা তৈরি করে আদালতে দাখিল করতে হবে।
রেজা-ই-রাকিব বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে যেসব ভিডিও কনটেন্ট প্রচার-পরিবেশন করা হচ্ছে, সেগুলোকে আইনের আওতায় আনার জন্য এবং তদারকি, নিয়ন্ত্রণসহ এসব মাধ্যম থেকে কীভাবে রাজস্ব আদায় করা যায়, তার জন্য নীতিমালা করতেই এ কমিটি করা হয়েছে।’
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে অতিরিক্ত তথ্য সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই কমিটি করা হয়েছিল। বিটিআরসির মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি, এনবিআরের একজন প্রতিনিধি ছাড়াও আইনজীবী রেজা-ই-রাকিব আছেন সেই কমিটিতে।
গত বছরের ১৫ জুলাই ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে (ওটিটি প্ল্যাটফর্ম) ছড়িয়ে পড়া ওয়েব সিরিজের ‘অনৈতিক, নিন্দনীয় ও আইন-বহির্ভূত ভিডিও’র অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এর আগে গত বছরের ১৪ জুন বাংলাদেশি ওয়েব সিরিজের ‘বিতর্কিত’ অংশ বাদ দিতে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে তিনি ১২ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন।