জমানো টাকা ফেরত চাওয়ায় দেবরের পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার ভাবী ফাতেমা আক্তার সুমাকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গেলো ২৩ ডিসেম্বর ফাতেমাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান অপর একটি আদালত। সেই রিমান্ড শেষে শনিবার তাকে আদালতে হাজির করে ফের পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই অমলকৃষ্ণ দে। আসামিপক্ষে আইনজীবী ইলিয়াস উদ্দিন মৃধা ও সাইফুল ইসলাম রনি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড ও জামিন আবেদন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট ভুক্তভোগী মো. সামিউল। স্টিলের প্লেনশিটের দোকানে চাকরি করে বেতনের টাকা বড় ভাবী ফাতেমার কাছে জমা রাখতেন তিনি। সেই জমানো টাকা ফেরত চাইলে ঘটনার দিন ৯ নভেম্বর শাহবাগ থানাধীন পীর ইয়েমেনী মার্কেটের সামনে তাকে যেতে বলেন ফাতেমা। কাজে যাওয়ার জন্য বের হয়ে ভাবীর ফোন পেয়ে সেখানে যান সামিউল। সেখানে গেলে ফাতেমা রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা না দিয়ে পীর ইয়ামেনী আবাসিক হোটেলের পঞ্চমতলা ৫১৪ নং রুমে যেতে বলেন। রুমে যাওয়ার পরপরই আসামি সামিউলের চোখে-মুখে চেতনানাশক স্প্রে করেন। তখন সামিউল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। আসামি ফাতেমা অজ্ঞান অবস্থায় দেবরকে হত্যার উদ্দেশে পুরুষাঙ্গের মাথা কেটে ফেলেন।
দুই ঘণ্টা পর সামিউলের জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় আসামি তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পুরুষাঙ্গের কাটা অংশ দেখিয়ে বলেন, তোর বিয়ে করার স্বাদ মিটিয়ে দিয়েছি। আসামি বিষয়টি গোপন রাখার কথাও বলেন সামিউলকে। পরে আসামি নিজেই হোটেলের বাইরে অবস্থানরত অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের সহায়তায় সামিউলকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসা না হওয়ায় এরপর তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও কোনও চিকিৎসা না পাওয়ায় বিকেল পাঁচটার দিকে আল মানার হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভুক্তভোগী এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার প্রায় দেড়মাস পর ২২ ডিসেম্বর সামিউলের মেজ ভাই শাহবাগ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পরই দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন পশ্চিমদী শ্যামপুর এলাকা থেকে ভাবী ফাতেমা আক্তার সুমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।