অস্থিতিশীল বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মতো বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। ডিমও তার বাইরে নয়। এক সময় ডিম সস্তায় পাওয়া গেলেও দুর্মূল্যের বাজারে সেটির দামও আকাশচুম্বী। ফলে ভোক্তাদের ওপর বাড়ছে চাপ।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের এ সময়ে যে ব্রয়লার মুরগির ডিমের হালি ছিল ৩০ টাকা, তা বর্তমানে গিয়ে ঠেকেছে ৪৫ টাকায়। অর্থাৎ আগে প্রতিটি ডিম কিনতে ৭ টাকা ৫০ পয়সা প্রয়োজন হলেও এখন লাগছে ১১ টাকা ২৫ পয়সা।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে ৩২.২৬% বাড়তি দাম দিয়ে ডিম কিনতে হচ্ছে।
দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ডিমের উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত খামারিরা জানান, উপাদানের দাম বাড়ার কারণে মুরগীর খাবারের দাম বেড়েছে। ভালো কোম্পানির এক বস্তা মুরগির খাবারের দাম এখন ৩ হাজার টাকার ওপরে, যা কি-না এক বছর আগেও দুই হাজার টাকার কম ছিল। ভুট্টা, সয়াবিন মিল, রাইস পলিশসহ যা যা দরকার সবকিছুর দামই বেড়েছে।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা জানান, ফিড তৈরিতে ৫০-৫৫% ভুট্টা এবং ৩০-৩৫% সয়াবিন মিলের দরকার হয়। গত বছরের মার্চে প্রতি কেজি সয়াবিন মিলের দাম ছিল ৪৯ টাকা থাকলেও তা এখন ৬৫-৬৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অন্যদিকে, ভুট্টার দাম গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৮ টাকা, বর্তমানে যা ৩৫ টাকা।
ফিডের দাম বৃদ্ধির প্রভাব কীভাবে মুরগি পালনের ওপর পড়ছে তা জানিয়ে রংপুর সদর উপজেলা পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরমানুর রহমান লিংকন জানান, ছয় মাস আগে একটি ডিম উৎপাদনের খরচ ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সার মতো। তখন খুচরায় ৮ থেকে ৮ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে একটি ডিম উৎপাদনের পেছনে ৮ টাকা ৩০ পয়সা ব্যয় হচ্ছে। খামারিরা ৯ টাকায় যে ডিম বিক্রি করছে, সেটি খুচরায় গিয়ে বর্তমানে ১১ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ফিডের দাম বাড়ার প্রভাব ডিমের দামের ওপর পড়ায় দিনশেষে ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এক বছর আগের তুলনায় হালিতে ডিমের দাম ১৫ টাকা বেড়েছে। যারা একটু বেশি করে ডিম কিনেন, তাদের অবশ্য প্রতি ডজন ডিম কিনতে হচ্ছে অন্তত ১৩০ টাকায়, যা দুই মাস আগেও ১০০-১১০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেতো।
বাড্ডা এলাকার মাহতাব জেনারেল স্টোরের দোকানি মাহতাব হোসেন বলেন, ‘‘প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়ছে। যারা ডিম সরবরাহ করছেন তারা নতুন নতুন রেট দিচ্ছেন বলেই আমাদেরকে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন ৪৫ টাকা হালি হিসেবে ডিম বিক্রি করছি। দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষও কম কিনতে শুরু করেছে।’’