নেত্রকোণার মদনে এক স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাসুম মিয়া নামে এক কলেজছাত্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অপহরণের মামলা হয় থানায়। পরে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও মামলা থেকে বাঁচতে সাজানো হয় বিয়ের নাটক। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করার পরই অবসান ঘটে নাটকের।
ঘটনাটি ঐ উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার। অভিযুক্ত মাসুম মিয়া ঐ এলাকার ইকয়াল মিয়ার ছেলে। সে ময়মনসিংহ রয়েল মিডিয়া কলেজের ছাত্র। দীর্ঘদিন আগে প্রতিবেশী ঐ হতদরিদ্র স্কুলছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলে সে। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে প্রেমিকাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এলাকায় দফায় দফায় সালিশ বৈঠক হয়। পরে বিচার না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর মাসুম মিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ঐ কিশোরীর বাবা। ১৪ সেপ্টেম্বর মদন থানায় অপহরণ মামলা হয়।
এদিকে অভিযোগের পর পরই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর নীলফামারী সদর উপজেলার দক্ষিণ রামনগর গ্রামের জহুরুল হকের মেয়ে জেসমিন আক্তারকে বিয়ে করে অভিযুক্ত মাসুম মিয়া। পরে মামলা থেকে বাঁচতে নানা কৌশল নিতে শুরু করে তার পরিবার। মাসুমের প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে সাজানো হয় ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বিয়ের নাটক। ২৩ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হয় ধর্ষক মাসুমের সঙ্গে। বিয়ের পরই ঐ কিশোরীকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় চলে যায় মাসুম। দুইপক্ষ মীমাংসা হওয়ার মর্মে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপরই ঐ কিশোরীকে নানাভাবে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে মাসুমের পরিবার।
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়েটাকে কয়েকদিন বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে মাসুম। মামলা করার পর এলাকার মাতুব্বরা মিলে আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে মাসুমের সঙ্গে। মাসুম আরেকটা বিয়েও করেছে। এখন আমার মেয়েকে অত্যাচার-নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমি এখন কোথায় গিয়ে বিচার চাইবো?
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাসুম মিয়া ঐ কিশোরীর সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানায়। তার বাবা ইকবাল মিয়ার মেবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মদন থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এখন বিষয়টি আদালত দেখবে। ভুক্তভোগী পরিবার যদি পুনরায় লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
#ডেইলি বাংলাদেশ