ধর্ষণের শিকার এক কলেজছাত্রী মামলা করে বিপাকে পড়েছেন। মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছেন আসামির পরিবার ও স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি।
অভিযোগ উঠেছে মামলার আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় এরইমধ্যে প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে ফেলেছে। হুমকির পরও নিচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ। যদিও পুলিশ বলছে বিষয়টি খুবই ‘গুরুত্বের’ সঙ্গে দেখছেন তারা।
জানা যায়, বছর খানিক আগে বন্ধুর মাধ্যমে ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকার লতিফপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের ছেলে রাহাত কায়সার অপুর। এরপর মোবাইলে কথা বলা শুরু। জড়িয়ে পড়েন প্রেমে। এক পর্যায়ে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন অপু।
বারবার বিয়ের সময় দিলেও তাকে বিয়ে না করে সময় পার করতে থাকেন। কিন্তু পরে জানিয়ে দেন তাকে আর বিয়ে করবেন না। পরে মেয়েটি আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।
মামলার পর ওইদিনই পুলিশ অপুকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে যান অপু ও তার পরিবার। দিতে থাকেন হুমকি।
নির্যাতিতা ওই নারী বলেন, গাজীপুর সিটি কপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোন্তাজ উদ্দিন মন্ডল আমাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়ে আসছেন। তিনি বলছেন টাকা নিয়ে মামলা তুলে নিতে। যদি তা না করি তাহলে আমাকে সমাজে হেয় করতে যা যা করার দরকার তা তারা করবে। তাদের পকেটে থাকে নাকি প্রশাসন।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, ছেলেটি তাদের আপত্তিকর ভিডিও গোপনে রেকর্ড করে রাখে। মামলা তুলে না নিলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে।
পিতৃহীন মেয়েটির মা বলেন, লজ্জায় ও অপমানে মেয়েটি দু’বার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাকে মানসিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রেখেছে। এতো হুমকি দিলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি কপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোন্তাজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘মেয়েটি কাজটি ঠিক করে নাই। এ বয়সের ছেলেরা একটু এদিক সেদিক করতে পারে। মেয়েটা ছেলের সম্পত্তি দেখে বিয়ে করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।’
তবে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল হক বলেন, বিষয়টি আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। হুমকির বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মাহফুজুর রহমান নিপু/এফএ/জিকেএস
#জাগো নিউজ