সিলেট নগরীতে করোনা পরিস্থিতিতে এক সেবিকাকে (নার্স) বাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগ পেয়ে পরপর দুইদিন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে গিয়ে ফ্ল্যাটের মালিকের ভাতিজাকে সতর্ক করে দিয়েছেন। শুক্রবার বিকেল ৪টার মধ্যে সর্বশেষ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সাবিনা ইয়াসমিনকে বাসা ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়।
সাবিনা ইয়াসমিন জানান, এক সহকর্মীর সহায়তায় নগরীর নবাব রোডের ঝর্ণা ভিলায় ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়েছেন। এই বাসার মালিক জাকির আহমদ যুক্তরাজ্য প্রবাসী। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনি স্বামী, পাঁচ মাসের সন্তানসহ ওই ফ্ল্যাটে উঠেন। সেদিন বিকেলে বাসার কেয়ারটেকার রুবেল মিয়া এসে তাদের বাসা ছাড়ার জন্য চাপ দেন। এ অবস্থায় নার্স সাবিনা বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অবহিত করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসে বাসার কেয়ারটেকার রুবেল মিয়া ও নিচতলার বাসিন্দা প্রবাসী মালিকের ভাতিজা সাজু আহমদকে সতর্ক করে যান। এতে কাজ হয়নি, শুক্রবার সকালে সাজু আহমদ এসে নার্স সাবিনাকে ফ্ল্যাট ছাড়ার কথা বলেন। বিকেল ৪টার মধ্যে বাসা না ছাড়লে লোকজন দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।
এ অবস্থায় ওই নার্সকে বাসা ছাড়ার জন্য আর চাপ দেওয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে চূড়ান্ত সতর্ক করে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ওসি মো. সেলিম মিঞা জানান, নার্সকে বাসা ছাড়ার জন্য মালিক পক্ষের লোকজন চাপ দিচ্ছে বলে খবর পেয়ে পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত দুইবার গিয়ে সতর্ক করেছে। এরপর ওই নার্সকে বাসা ছাড়তে চাপ দিলে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ায় জন্য তাদের সংস্পর্শে যাচ্ছেন অনেকে চিকিৎসক ও সেবিকা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক জায়গায় স্বাস্থ্যকর্মীদের বাসা ছাড়তে মালিকপক্ষ চাপ ও হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।