শেরপুর প্রতিনিধিঃ শেরপুরের নালিতাবাড়ী রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৭.৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ভোট পুণঃ গণনা ও সিএইচসিপি ফুলপুর সিসি হেনা খাতুনের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অই ইউনিয়নের পরাজিত ৫ প্রার্থী।
গত রোববার দুপুরে ফুলপুর বান্দেরবাজার এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলনের এসব দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৯নং ওয়ার্ডের টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহজাহান কবির মঞ্জু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে আমার ব্যাপক গণজোয়ারের ছিল। জনগণ সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচন শুরু থেকে ভোট গণনার শেষ পর্যন্ত কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। তবে নির্বাচন সুস্থ হলেও ভোট গণনায় অনিয়ম ও বিপুল পরিমান অর্থের প্রলোভনে রেজাল্ট ওলট-পালট করা হয়েছে। ৩ ভোটের ব্যবধানে ফুটবল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া ফরহাদ হোসেনকে বিজয়ী ঘোষনা করে তড়িঘড়ি করে কেন্দ্র ত্যাগ করেন প্রিজাইডিং অফিসার ছাইফুল ইসলাম। এর আগে টিউবওয়েল প্রতীককে ১১ ভোটে বিজয়ী বলে মৌখিক ঘোষনা করেন প্রিজাইডিং অফিসার। পরবর্তী মিষ্টিমুখ করাতে হবে বলে আমার কাছে নগদ তিন হাজার টাকা চাওয়া হয়। পরবর্তী আমি সেটি পূরণ করি। পরে সেখানে থাকা আমার কর্মীসমর্থকগণ বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠে। পরোক্ষনে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার হঠাৎ আমার প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ফরহাদ হোসেনকে মাত্র তিন ভোট বেশি দেখিয়ে বিজয়ী ঘোষনা করে গাড়ী যোগে কেন্দ্র ত্যাগ করেন। নির্বাচনের আগের দিন রাতে প্রিজাইডিং অফিসার ছাইফুল ইসলাম ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ২৭নভেম্বর সন্ধ্যায় ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী ফরহাদ হোসেন এর নিকটআত্মীয় আবু বক্কর সিদ্দিক মাষ্টার এর বাড়িতে রাত্রিযাপন ও ব্যাপক পরিসর খাবারে অংশ নেন। এছাড়াও প্রার্থীর বোন হেনা খাতুন ৮নং ফুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় একই সময় ওই দিনে পার্শ্ববর্তী ৯নং ওয়ার্ডে তার ভাইকে মেম্বার পদে বিজয় সুনিশ্চিত করার লক্ষে পুলিং অফিসারের দায়িত্বে অবহেলা করে নিজ ভাইয়ের পক্ষে এজেন্ট হয়েছেন। যা জনমনে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে এজেন্ট হওয়া কতটুকু আইনগতভাবে যুক্তিযুক্ত!
তাই পূণরায় ভোট গণনার জন্য আমরা আদালতে স্মরণাপন্ন হয়েছি।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার বরাবর প্রাপ্ত ভোট পূণঃ গণনার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় এজেন্ট হেনা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ফুটবল প্রতীকে অংশ নেয়া ফরহাদ হোসেন আমার সহোদর ভাই। আমাকে ৮নং ওয়ার্ড ফুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিং অফিসার হিসেবে দেওয়া হয়েছিলো আমি নির্বাচনের আগের দিন সমস্যা দেখিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার নেছার উদ্দিনকে না করেছি। পরে নির্বাচনের দিন আমার ভাইয়ের ফুটবল প্রতীকের পক্ষে এজেন্ট হই। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি এজেন্ট থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার এটি আজও জানা নেই। থাকা যায় কিনা।
এ বিষয়ে নেছার উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, হেনা খাতুন আমার নিকট সমস্যা দেখিয়ে পুলিংয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। আমি বলেছি সমস্যা সমাধান হলে যদি আসতে পারেন তাহলে অবশ্যই কেন্দ্রে আসবেন। তিনি না আসার কারনে তার জায়গা অনুপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
৯নং ওয়ার্ডের কেরেঙ্গাপাড়া মক্তব মাদ্রাসা কেন্দ্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ছাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচন অবাধ নিরেপক্ষ হয়েছে। আমি কখনই টিউবওয়েল প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করিনি। তিন ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়া ফুটবল প্রতীকের যে প্রার্থী ছিলো তাকে ঘোষনা করে দায়িত্ব প্রাপ্ত স্টাফদের নিয়ে চলে এসেছি। উভয় প্রার্থীদের এজেন্ট ভোট গণনার সময় কেন্দ্রে ছিলো। তারা রেজাল্ট মেনে নিয়েছেন।