বাংলাদেশের দেওয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। মেহেদী মিরাজের ঘূর্ণিতে প্রথম ওভারেই রিশাদকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাহেবজাদা ফারহান। এক ঝলকের জন্য মনে হয়েছিল, বুঝি ভাগ্য সহায় হচ্ছে টাইগারদের। কিন্তু সেই চাপ সামলে নেন সাইম আইয়ুব এবং মোহাম্মদ হারিস। এই দুই ব্যাটসম্যান মিলে ৯২ রানের এক বিধ্বংসী জুটি গড়েন। আইয়ুব ২৯ বলে ৪৫ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে আউট হলেও, হারিসের ব্যাট থেকে যেন বেরিয়ে আসে আগুনের ফুলকি!

অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরি হারিসের ব্যাটে! চারে নেমে মোহাম্মদ নওয়াজও হারিসের সাথে যোগ দেন এবং তিনিও বেধড়ক পেটাতে থাকেন। কিন্তু ম্যাচের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন মোহাম্মদ হারিস। মাত্র ৪৫ বলেই তিনি হাঁকান তার শতক! অবিশ্বাস্য এই ইনিংসে ৪৬ বলে অপরাজিত ১০৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে, যেখানে ৮টি চারের পাশাপাশি ছিল ৭টি বিশাল ছক্কা। মনে হচ্ছিল, একা হাতেই যেন তিনি লড়ছেন গোটা বাংলাদেশের সাথে।

নওয়াজ ১৩ বলে ২৬ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নিলেও, ততক্ষণে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে। অধিনায়ক সালমান আঘা ১২ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থেকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন পাকিস্তানকে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মিরাজ ২ উইকেট পেলেও, তানজিম সাকিব পেয়েছেন মাত্র একটি উইকেট। হারিসের এমন তাণ্ডবের সামনে যেন অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন টাইগার বোলাররা।

ইমন-তানজিদের পাহাড়সম পুঁজি যেন বড্ড মামুলি! এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান এবং পারভেজ ইমনের ব্যাটে ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৬ রানের বিশাল পুঁজি গড়ে টাইগাররা। ইমন ৩৪ বলে খেলেন ৬৬ রানের এক অসাধারণ ইনিংস, আর তানজিদ ৩২ বলে করেন ৪২ রান। এছাড়াও হৃদয় ২৫ এবং অধিনায়ক লিটন ২২ রান করে দলের সংগ্রহে অবদান রাখেন। পাকিস্তানের হয়ে হাসান আলী এবং আব্বাস আফ্রিদি ২টি করে উইকেট শিকার করেন।

এই হারে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিয়েই লাহোর ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। মোহাম্মদ হারিসের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং প্রদর্শনীর সামনে যেন ম্লান হয়ে গেল টাইগারদের সমস্ত প্রচেষ্টা। এ যেন এক নাটকীয় এবং বিস্ময়কর পরাজয়, যা দীর্ঘদিন হয়তো মনে রাখবে ক্রিকেটপ্রেমীরা।