আফগানিস্তান সীমান্তে আবার পাকিস্তান বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দিল পাকিস্তানি তালিবান। শুক্রবার উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে বিদ্রোহী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং ‘গুল বাহাদুর গ্রুপ’-এর যোদ্ধাদের হামলায় অন্তত তিন সেনাকর্মী নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান সেনার ‘ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস’ (আইসিপিআর)-এর তরফে জানানো হয়েছে, খাইবার জেলায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টিটিপি এবং ‘গুল বাহাদুর গ্রুপ’-এর বিদ্রোহীরা আফগানিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাজগল উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে পাকিস্তানি বাহিনীর উপর হামলা চালায়। সেনাদের পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয় চার বিদ্রোহীরও।
খাইবার জেলার লাগোয়া বান্নু, লাক্কি মারওয়াত এবং কারাক টিটিপির ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত। অনুপ্রবেশকারীরা হামলা চালিয়ে সে দিকেই পালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, শুক্রবারও বান্নুতে দু’টি পৃথক হামলা চালায় টিটিপি বাহিনী। তাতে তিন সেনা এবং তিন জন বেসামরিক নাগরিক আহত হন। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টিটিপি গোষ্ঠীর সঙ্গে পাক সরকারের শান্তিবৈঠক ভেস্তে যায়। তার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ওই এলাকায় টিটিপি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে পাকিস্তানের সেনা।
অভিযানের জবাবে সেনা এবং বেসামরিক নিশানার উপর পাল্টা হামলা চালাচ্ছে টিটিপিও। আফগানিস্তানের সীমান্ত লঙ্ঘন করেও হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সরাসরি স্বীকার করেন, তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের ডেরায় পাক সেনার হানাদারি কথা! সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে আফগানিস্তানে আমাদের সেনা অভিযান চলবে।’
মন্ত্রীর ওই হুমকির পরে আফগানিস্তানের তালিবান শাসকেরাও প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছে ইসলামাবাদকে। অন্য দিকে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে সক্রিয় ‘গুল বাহাদুর গ্রুপ’-এর প্রধান হাফিজ গুল বাহাদুর একদা টিটিপিতে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে টিটিপিতে মেহসুদ জনগোষ্ঠীর আধিপত্যের প্রতিবাদ করে উঠমানজাই ওয়াজিরি সম্প্রদায়ের নেতা হাফিজ নতুন সংগঠন করেন। আফগান তালিবানের একাংশে সঙ্গে প্রায় চার হাজার যোদ্ধার বাহিনীর নেতা হাফিজের সম্পর্ক নিবিড়। সম্প্রতি টিটিপির সঙ্গেও সমঝোতা হয়েছে তার।