দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা যুবলীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের হবিবপুর ব্লকের টিকাপাড়া ও কেদারিপাড়ার মধ্য দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।
এ সময় বিএসএফ এর সদস্যরা তাকে আটক করে। বর্তমানে রুনু হবিবপুর থানা হেফাজতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে আছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দৈনিক আনন্দবাজারের অনলাইন ভার্সনে খবরটি প্রচার করা হয়েছে। ওই খবরে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকা টিকাপাড়া ও কেদারিপাড়া বর্ডার আউটপোস্টের (বিওপি) মধ্যে দিয়ে উন্মুক্ত সীমান্ত পথে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন ফয়সাল। পরে বিএসএফ সদস্যদের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
ফয়সাল আহমেদ রুনুর গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটায়। তার বাবা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আব্দুল গফুর সরকার তিনবার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর ২০০৮ সালে নওহাটা পৌর মেয়র নির্বাচিত হন।
ফয়সাল আহমেদ রুনু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েই ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের সম্মেলনে রুনু রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন। সবশেষ গত জুনে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে তিনি জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হন।
ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজারের খবরে আরও বলা হয়েছে- ফয়সাল আহমেদ রুনুকে বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। থানা হেফাজতে রেখেই বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার অনুপ্রবেশের বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ভারত পুলিশ জানতে পেরেছে, রুনু ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটে। এরপর রুনু প্রায় দুই মাস বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত প্রাণের ভয়ে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। বর্তমানে রুনু হবিবপুর থানা পুলিশ হেফাজতে আছেন।
এদিকে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পরপরই যুবলীগ নেতা রুনু গা ঢাকা দেন। তার নামে এখন পর্যন্ত দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।
ভারত সীমান্তে যুবলীগের নেতা ধরা পড়ার বিষয়ে বিজিবির নওগাঁ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সাদিকুর রহমান জানিয়েছেন, ফয়সাল আহমেদ রুনুকে আটকের বিষয়ে তারা এখনও তেমন কিছুই জানেন না। তবে এমন খবর আসার পর তাদের পক্ষ থেকে বিএসএফ এর কাছে পুরো বিষয়টি তারা জানতে চেয়েছেন।