প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পর কানাডায় পাড়ি জমানো পি কে হালদার (প্রশান্ত কুমার হালদার) বিমানের কোন ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেন, ‘দেশে ফিরে পিকে হালদারকে আইনি হেফাজতে যেতে হবে। এরপর বিনিয়োগকারীদের অর্থ কীভাবে ফেরানো যাবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর এজন্য প্রথমেই হাইকোর্টকে জানাতে হবে, কবে কোন বিমানে ফিরতে চান প্রশান্ত কুমার হালদার।’
আদালতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। এছাড়াও সব মিলিয়ে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসময় গোপনে কানাডায় পাড়ি জমান তিনি।
দীর্ঘদিন সেখানে অবস্থান শেষে পি কে হালদার দেশে ফিরতে চান এবং এজন্য তার নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং একটি আবেদন জানায়। সে আবেদনে বলা হয়, পিকে হালদার দেশে ফিরতে চান। এজন্য তিনি নিরাপত্তা চান। বিনিয়োগকারীদের অর্থ পরিশোধ করতেই তার এই উদ্যোগ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদারসহ ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন আদালত।
সেই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড। তবে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় হাইকোর্টের আদেশ থেকে যায়। তবে এসব আদেশের অনেক আগেই পি কে হালদার গোপনে দেশত্যাগ করে কানাডায় পাড়ি জমান।