ads
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্বৈরাচারের দোসর আরও ৩৯ আমলার দ্রুত অপসারণ দাবি জুলাই ঐক্যের ধর্ষণের পর গর্ভপাত: সালিশে ব্যর্থ, মামলাও নেয়নি পুলিশ হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের ব্যয় দিনে ২০০ মিলিয়ন ডলার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা বিপজ্জনক নজির: জাতিসংঘে চীনা দূত বেদখল খাসজমি উদ্ধারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ভূমি উপদেষ্টার বান্দরবানের লামায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ৯ সন্ত্রাসী আটক দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু শ্রীবরদীতে মাছের ঘেরে ২ শিশুর মরদেহ, দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড!

ফ্লাইওভারে অভিনব সুতার ফাঁদ, মোটরসাইকেল চালকদের হাতিয়ে নিচ্ছে সব

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ৩৮ বার পঠিত

রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলোতে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য ‘মরণফাঁদ’ তৈরি করছে সংঘবদ্ধ চক্র। ফ্লাইওভারের নির্জন জায়গা দেখে দুই পাশের রেলিংয়ে বেঁধে রাখা হয় নাইলনের সুতা—যা দ্রুত ছুটে চলা চালকদের চোখে পড়ে না। এসব সুতার ফাঁদে আটকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে। মোটরসাইকেলসহ উল্টে পড়া মাত্র আশপাশ থেকে ছুটে আসে ওঁত পেতে থাকা চক্রের সদস্যরা। এরপর তারা দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ব্যক্তির টাকা পয়সা ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নেয়।

হাতিরঝিল, মগবাজার, খিলগাঁও ও কুড়িল ফ্লাইওভারে এই ফাঁদ পাতা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কয়েকজন চালক। এসব ফ্লাইওভারে বেঁধে রাখা নাইলনের মজবুত সুতার টানে হাত ও গলায় জখম হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন কয়েকজন চালক। এই চক্রের সদস্যদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা না হলে ফাঁদে পড়ে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এসব ফ্লাইওভার দিয়ে চলাচলকারী মোটরসাইকেল চালকরা।

গত ১০ জুলাই সুতার ফাঁদে পড়ে মোবাইল ও মানিব্যাগ খুইয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভির জোবায়ের।  মধ্যরাতে বন্ধুকে রামপুরায় নামিয়ে দিয়ে হাতিরঝিল হয়ে ধানমন্ডি ফেরার পথে মধুবাগ ফ্লাইওভারে সুতার ফাঁদে পড়েন তিনি। তানভির বলেন, ‘হাতিরঝিলের মধুবাগ ফ্লাইওভার থেকে নামার পথে কিছু একটা হাতে আটকে যায়। ব্যথা পেয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে দেখি— সুতা আটকে হাত কেটে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে দেখলাম কয়েকজন এসে আমাকে ঘিয়ে ধরলো। চাকু দেখিয়ে মোবাইল ও  মানিব্যাগ নিয়ে গেলো। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা পালিয়ে যায়।’

গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় কুড়িল ফ্লাইওভারে এমন ফাঁদে পড়েন শেখ রায়হান কবির। তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুড়িল ফ্লাইওভারে সুতায় আটকে তার হাত কেটে যায়। তবে তিনি সেখানে না থামায়  কোনও বিপদ ঘটেনি। ‍

ভরদুপুরে সুতার ফাঁদে পড়েছিলেন সংবাদকর্মী মোহাম্মদ হোসাইন তারেক। গত ১১ জুলাই দুপুরে তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন বলে জানান। তারেক বলেন, ‘মিন্টো রোড থেকে মগবাজার ফ্লাইওভারে উঠে বামে টার্ন নিয়ে কাওরান বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। ফ্লাইওভারের ওপর বামের লেনের রাস্তাটা বেশ নীরব ছিল। আর তখন বৃষ্টি হচ্ছিলো। মূল ফ্লাইওভার থেকে বামে টার্ন নিতেই সুতায় গলা ও হাত জড়িয়ে যায়। আমার বাম হাতের একটু অংশ কেটে যায়।  কিন্তু একটু এদিক-সেদিক হলেই আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।’

মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী অংশে সুতার ফাঁদে পড়ে গলার চামড়া কেটে যায় মাহমুদ রেজা তফুর। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে ওইদিন বেঁচে গেছি। যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভারে আমি ৬০ কিলোমিটার স্পিডে  বাইক চালাচ্ছিলাম।  হঠাৎ একটা সুতা গলায় প্যাঁচিয়ে গেলো, আর প্রচণ্ড যন্ত্রণা অনুভব করলাম। আমি বাইকটাকে কোনও রকমে এক হাত দিয়ে কন্ট্রোল করলাম, আরেক হাত দিয়ে সুতাটা ধরলাম, যেন গলাটা বাঁচাতে পারি।  সুতার টান এত বেশি ছিল যে, আমার হাত আর আঙুল কেটে গেছে। হেলমেটটা গলার ওপর সুতার প্রেসার কমাইছে, নইলে আরেকটু জোরে  প্রেসার পড়লে গলার রগটা কেটে যেতে পারতো।’

সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট দিনের বেলা খিলগাঁও ফ্লাইওভারে সুতা দেখে গাড়ি থামিয়ে তা সরিয়ে রাখেন আসাদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি যাওয়ার সময় খেয়াল করলাম সুতা বাঁধা। পরে তা আমি খুলে নিয়েছি। অনেকখানি লম্বা সুতা ছিল। কোনও বাইকার যাতে ক্ষতির শিকার না হয়, সেজন্য খুলে সরিয়ে রাখি।’

রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলোতে সুতায় পাতা ফাঁদের খবর পুলিশ সদস্যদের কানেও পৌঁছেছে। হাতিরঝিলে এক পুলিশ সদস্যও এ ধরনের ফাঁদে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার সহকর্মী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাতিরঝিল থানার এক পুলিশ সদস্য জানান, এগুলো আশপাশের পোলাপান করে। সুযোগ পেলেই তারা ছিনতাই করে। মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়, তখন কিছু দিন বন্ধ থাকে। পরে আবারও শুরু হয়।

এই থানার একাধিক পুলিশ সদস্য এ ধরনের ঘটনার কথা স্বীকার করলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল রশীদ তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার এলাকার ফ্লাইওভারগুলোতে এমন কোনও ঘটনার খবর আমি পাইনি।’

এ ধরনের অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার মো. ওয়ালিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘কী উদ্দেশ্যে এ ধরনের কাজ করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। যারা এ ধরনের কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102