শ্রীলেখা মিত্র নাকি সব সময়ই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। এ রকম কথা প্রচলিত টালিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশের শোবিজ মহলের সর্বত্র। এবার যেন ছুঁড়ে মারলেন ককটেল। নিমেষে ফুটে সর্বত্র জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে গেল। হ্যাঁ, আসলেই এমনটা করেছেন শ্রীলেখা।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আগে আমার চোখেই হারিয়ে যাও… বুকের ভাঁজ তার সুখকর মুহূর্ত খুঁজে নেবে।’
গত ২৭ ডিসেম্বর নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে এই পোস্ট দেওয়ার পর কার্যত কলকাতার বাংলা পত্রিকাগুলো শ্রীলেখার এই বক্তব্যকে চরম সাহসিকতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরছে। ‘আমার চোখেই হারিয়ে যাও… বক্ষ বিভাজিকা তাঁর আশ্রয়ের পথ খুঁজে নেবে।’
অভিনেত্রীর কথায়, ‘এ ছবিতে আমার ক্লিভেজ বেরিয়ে রয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, ছবি তোলার জন্য ক্লিভেজ ঢাকতে হবে কেন! আগে আমার চোখের দিকে তাকাও। তারপর আমার ক্লিভেজের দিকে তাকাবে।’
নারীর সৌন্দর্যকে উপভোগ করার মধ্যে কোনো অন্যায় দেখেন না শ্রীলেখা। কিন্তু সেই সৌন্দর্য দেখার নামে ‘নোংরামি’ বরদাস্ত করতে রাজি নন অভিনেত্রী। তিনি মনে করেন, শালীন-অশালীন নির্ভর করে নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে মানসিকতার ওপর। তাই কোনো নারী শাড়ি পরলেও তাকে কুকথা শুনতে হতে পারে, আর খোলামেলা পোশাক বেছে নিলেও তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়।
নিজের স্বভাবে থাকতে ভালোবাসেন শ্রীলেখা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উচিত কথা বলতে কার্পণ্য করেন না। এর আগেও নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অভিনেত্রী। শুধু নারী হিসেবে নয়, একজন মা হিসেবেও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
এবার ‘বডি শেমিং’-এর বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিলেন শ্রীলেখা। পাশাপাশি যেন, এও বুঝিয়ে দিলেন শরীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তাই তাঁর প্রদর্শন করা না করার অধিকারও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত।
কলকাতার একটি পত্রিকা বলছে, নারী শরীরকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার করার রীতি ভারতবর্ষে অনেক দিন ধরেই প্রচলিত। ২০২০ সালের করোনাকালেও তার উদাহরণ ঘটনা-দুর্ঘটনা হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। দিল্লির অভিজাত এলাকা থেকে কলকাতার অত্যাধুনিক সজ্জায় সজ্জিত নিউটাউন- সর্বত্র নারী নির্যাতনের ‘অভিযোগ’ রয়েছে।
সিনেমা কিংবা সিরিয়ালের অভিনেত্রী মানেই তো তাঁকে বা তাঁদের শরীর সম্পর্কে মন্তব্য অধিকার পাওয়া যায়! এই মতবাদের অনেক ‘ভক্ত’ রয়েছেন। ইদানীং আবার প্রযুক্তির কল্যাণে সর্বত্র তাঁদের অবাধ বিচরণ। সোশ্যাল মিডিয়ার আড়ালে দিব্যি ‘বডি শেমিং’ করে দেওয়া যায়। নিজের এই ছবির মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধেই বার্তা দিলেন শ্রীলেখা। চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদের ভাষা শেখালেন।