রাজধানীর বাড্ডা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত তরুণী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। স্বজনরা বলছেন, স্বামী আকাশের প্রতারণার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

প্রেম করে গত বছরের ১০ রমজান পরিবার থেকে পালিয়ে এসে পাশের এলাকার যুবক আকাশের সাথে ঘর বেঁধে ছিলেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরগোপালগাঁও গ্রামের কলেজছাত্রী সীমা। এরপর থেকে এই দম্পতি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ভাড়া বাসায় থাকতেন। এর মধ্যেই গর্ভবতী হন সীমা। গত ৩০ এপ্রিল, রাতে আকাশের মোবাইল থেকে সীমার বাবাকে ফোন করে জানানো হয়, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
খবর পেয়ে সীমার বাবা ঢাকার উত্তর বাড্ডা এলাকায় ওই ভাড়া বাসায় গিয়ে জানতে পারেন, ভাটারা থানা পুলিশ সীমা ও তার নবজাতক সন্তানের লাশ উদ্ধার করেছে। স্বজনরা এটিকে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে আকাশকে আসামি করে ভাটার থানায় মামলা করেন।
নিহতের বোন বলেন, এমনভাবে আমার বোনকে টর্চার করেছে যে সে সহ্য করতে না পেরে নিজের প্রাণ নিজেই দিয়ে গেছে। সঙ্গে বাচ্চাটাকেও নিয়ে গেছে।
নিহতের বাবা বলেন, আত্মহত্যা না, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সুবিচার চাই।
এলাকাবাসী বলছেন, সীমার স্বামী একজন চিহ্নিত প্রতারক। বেশ কয়েক বছর যাবত নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আইসিটি বিষয়ক কনসালটেন্ট দাবি করে আসছিল সে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরির প্রলোভনে স্থানীয়দের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি অনেকের।
ফেনী সোনাগাজীর চরমজলিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমএ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আইসিটির উপরে আছে বলে কোথাও গাড়ি ব্যবহার করেছে, কোথাও স্টিকার ব্যবহার করেছে। কাউকে চাকরি দেবে বলে প্রতারণার অভিযোগও এসেছে।
পুলিশ বলছে, তদন্ত করে এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডিএমপি ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তারুজ্জামন বলেন, ছেলেটা মেয়েটার সঙ্গে সম্পর্ক করেছিল। মেয়েটার বাবার কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে এসেছিল। সেগুলো পরিশোধ করতে পারছিল না। এ নিয়ে ঝামেলা চলছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকরি করে এমন একটা কার্ড দিয়েছে। যাচাই বাছাই প্রক্রিয়াধীন।
সীমা ফেনীর জয়নাল হাজারী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।