সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রিদোয়ান আহমেদ রুপম। বাবার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে নিজেই অপহরণের নাটক সাজায়। এরপর পরিকল্পনামাফিক নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে অন্য লোকের মাধ্যমে বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করা হয়।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না তার। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এল তার সাজানো অপহরণ নাটক। বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে রুপমকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রুপম পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া এলাকার মহিউদ্দিন সেলিমের ছেলে ও আল হেলাল একাডেমির ৭ম শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ জানায়, রিদোয়ান নিজেই আত্মগোপনে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজায়। পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেই বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে তার বাবাকে মুক্তিপণের জন্য ফোন দেয়া হয়।
সোনাগাজী থানা পুলিশ জানায়, গত ২৯ আগস্ট বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় রিদোয়ান। এ ব্যাপারে গত ৫ সেপ্টেম্বর তার বাবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর গত সোমবার বিকেল থেকে মুক্তিপণ দাবি করে তার বাবা মহিউদ্দিন সেলিমের নাম্বারে ফোন করতে থাকেন অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। বিষয়টি তিনি পুলিশকে অবহিত করেন।
থানার এসআই সাইফুদ্দীন জানান, বিষয়টি পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। দুটি নাম্বার হতে মহিউদ্দিনের সেলিমের মুঠোফোনে ফোন করা হয়। এরমধ্যে একটি রিদোয়ানের ব্যবহৃত মুঠোফোনের নাম্বার। কল করা নাম্বার নিয়ে ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রিদোয়ানের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকি। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার নাম্বরটির অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
রিদোয়ানের বাবা মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, সোমবার বিকেলে এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন রিদোয়ান লালপোল রয়েছে। ৩০ হাজার টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। রাতে রিদোয়ানের ব্যবহৃত মোবাইলফোন থেকে ফোন করে আবারো আমার কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে দুটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করি। এ ব্যাপারে র্যাব-৭ ফেনী কার্যালয়েও লিখিত অভিযোগ করেছিলাম।
স্থানীয়রা জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে একবার রিদোয়ান নিখোঁজ হয়ে গেছিল। সেবারও তার বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। টাকা না দেয়ায় কয়েকদিন পর রিদোয়ান নিজেই বাড়িতে হাজির হয়েছিল। এবার সে একই ঘটনা ঘটিয়েছে।
থানার ওসি মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম পলাশ জানান, তাকে চট্টগ্রাম হতে সোনাগাজীতে আনা হচ্ছে। সে স্বেচ্ছায় নিখোঁজ ছিলো। থানার আনার পরে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর সঙ্গে অন্য কেউ যুক্ত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।