সৈয়দা সায়মা চৌধুরী যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করার জন্য গিয়েছেন ২০১৬ সালে। বাজারজাতকরণ নিয়ে তিনি একটি লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন।
বিবিসিকে তিনি বলছেন, ”যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে হলে আগে থেকে পরিকল্পনা করা জরুরি। অন্তত এক বছর আগে থেকেই সেই পরিকল্পনা শুরু করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের আর্থিক সামর্থ্য বুঝে শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করতে হবে।”
বাংলাদেশে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে কিছুদিন আগে। এখন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পছন্দের তালিকায় যেমন বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তেমনি অনেকে বিদেশে পড়তে যাবার কথাও ভাবছেন।
বিদেশের স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনার তথ্য নিয়েই এই প্রতিবেদন।
সায়মা চৌধুরী বলছেন, ”প্রথমেই একজন শিক্ষার্থীকে ঠিক করতে হবে তিনি কোন দেশে পড়তে যেতে চান। কারণ একেকটি দেশের পড়াশোনা, খরচ, ভর্তি চাহিদায় পার্থক্য আছে। দেশ বাছাইয়ের পরে ঠিক করতে হবে যে, আমার সাবজেক্ট ও আর্থিক সামর্থ্যের সঙ্গে মিলিয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যেতে পারে। এক্ষেত্রেও একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বা চাহিদা, টিউশন ফির সঙ্গে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্য থাকে।”
ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের আঞ্চলিক সমন্বয়ক তাওসিফ মান্নান খান বলছেন, ”যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে সেপ্টেম্বরে ভর্তি সেশন শুরু হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে অন্তত এক বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করা উচিত। বিশেষ করে ইংরেজির ভর্তি চাহিদা যেমন, আইইএলটিএস বা অন্যান্য চাহিদা প্রস্তুতি করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ, আবেদন ইত্যাদি অন্তত একবছর আগে থেকে শুরু করতে হবে।”
তিনি বলছেন, যে বিষয়ে পড়তে চান, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে আপনার আর্থিক সামর্থ্য এবং পছন্দের সঙ্গে মিলছে কিনা।
ভাষা দক্ষতার প্রমাণ:
যেমন আইইএলটিএস, টোফেল, স্যাট অথবা জিআরই। একেকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে এসব চাহিদার পার্থক্য থাকতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় দেশগুলোর বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএসে ব্যান্ড স্কোর অন্তত ৬ থাকা দরকার। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এর চেয়ে বেশিও চাইতে পারে। তবে আমেরিকাসহ আরো দেশের কোন কোন সাবজেক্টে টোফেল, স্যাট বা জিআরই দরকার হতে পারে।
জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন, নরওয়ের মতো ইউরোপীয় দেশে পড়তে গেলে যেমন ইংরেজিতে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে সেই দেশের ভাষার দক্ষতা দরকার হতে পারে। বিশেষ করে জার্মানির মতো দেশে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ নিতে হলে জার্মান ভাষা জানতে হবে।
বাংলাদেশে পড়াশোনার ফলাফলের ওপর ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বিষয়ে ভর্তির ব্যাপারটিও অনেক সময় নির্ভর করে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেইল করেও পরামর্শ চাওয়া যেতে পারে। অনেক সময় ইংরেজি দক্ষতার ব্যান্ডস্কোরও ভর্তি বা বিষয় পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
ভর্তির প্রক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয় ও বিষয় বাছাই করার পরে অনলাইনের মাধ্যমে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে।
নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ইত্যাদি দেশের কেন্দ্রীয় ভর্তি ব্যবস্থাপনার ওয়েবসাইট আছে। সেখানে আবেদন করলে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বেছে দেয়া হয়।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
সেখানে পড়াশোনার সকল সনদ কাগজপত্র স্ক্যান করে তুলে দিতে হতে পারে। পাশাপাশি এসব সেগুলোর ফটোকপি কুরিয়ার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় পাঠাতে হতে পারে।
সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আবেদন গ্রহণ বা বাতিলের সিদ্ধান্ত ইমেইলের মাধ্যমে জানানো হয়।
আবেদনপত্র গ্রহণ করা হলে ভিসা আবেদনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
ভিসা আবেদনের সময় আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ দেখাতে হবে। প্রায় সব দেশেই শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাস কর্মকর্তারা দেখতে চাইবেন যে, শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ও থাকাখাওয়ার খরচ সে বহন করতে সক্ষম।
দেশ ভেদে টিউশন ফি হিসাবে অন্তত বছরে অন্তত ১০/১২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০/২২ লাখ টাকা খরচের সামর্থ্য থাকতে হবে। এর সঙ্গে শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, পোশাক, হাতখরচ, চিকিৎসা যোগ করতে হবে। লন্ডনের ক্ষেত্রে যেমন এক্ষেত্রে বছরে আরো অন্তত ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। এই খরচের টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিস্টারের ফি অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়।
অনেক দেশে স্বাস্থ্য বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। সেটি অবশ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন বীমা এজেন্সি করে থাকে, যেসব এজেন্সির নাম দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পূর্বেই জানাতে হবে যে, তারা সেই আবাসন সুবিধা নিতে চান কিনা। অথবা শিক্ষার্থীরা চাইলে নিজেরা আলাদাভাবে বাসা ভাড়া করেও থাকতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত নিজেদের রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
আবেদনের সময় উল্লেখ করতে হবে যে বৃত্তি নিতে চান কিনা। একই সময় বৃত্তির জন্যই প্রস্তুতি নিতে হবে।
ভারত, তুরস্ক, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারিভাবেই নানা ধরণের বৃত্তি রয়েছে।
এরকম বিখ্যাত কয়েকটি বৃত্তি হলো জাপানের মনবুশো বৃত্তি ও মনবুকাগাকুশো বৃত্তি, , এমএইচটিটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, জার্মানির ডিএএডি, অস্ট্রেলিয়ার ডেভেলপমেন্ট স্কলারশিপ, যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ, শেভেনিং স্কলারশিপ, যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট ফরেন স্টুডেন্টস প্রোগ্রাম, কানাডার হাম্বার ইন্টারন্যাশনাল এন্ট্রান্স স্কলারশিপ ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষার্থীদের পূর্ণ বা আংশিক বৃত্তির সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইটের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা সরকারি বৃত্তির নোটিশ পাওয়া যাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে বৃত্তির আবেদন করা যেতে পারে।
ভিসা আবেদনের সময় আবেদন পত্রের কাগজপত্রের মধ্যে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফার লেটার থাকতে হবে। এর সঙ্গে শিক্ষার্থীর আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ, অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে নিজের নামে বা গ্যারান্টারের নামে পর্যাপ্ত অর্থের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত থাকতে পারে।
শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করার জন্য যেসব দেশে যেতে চান, তার কয়েকটি দেশের ভর্তির পদ্ধতি এখানে বর্ণনা করা হলো।
ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের আঞ্চলিক সমন্বয়ক তাওসিফ মান্নান খান বলছেন, ”যুক্তরাজ্যে যারা স্নাতক বা আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে পড়তে যেতে চান, তারা UCAS ওয়েবসাইটের গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত সকল কাজ করতে পারেন। কারণ এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তথ্য, আবেদনের প্রক্রিয়াসহ সব তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়েও সেখানকার ভর্তি তথ্য, খরচ, আবেদনের প্রক্রিয়া ও অনলাইনে আবেদন করা যায়।”
তিনি বলছেন, একেকটি শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে পড়াশোনার খরচ ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন লন্ডনে পড়তে গেলে যে খরচ লাগবে, অন্য শহরে হয়তো খরচ কম হবে।
তিনি বলছেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বা UCAS সরাসরি আবেদন করা যায়। আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। পরবর্তীতে কুরিয়ারের মাধ্যমে হার্ড কপি পাঠাতে হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে বাছাই করলে ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে এবং ভর্তির চিঠিও পাঠাবে। সেই চিঠি নিয়ে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণসহ ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
যুক্তরাজ্যে আন্ডার গ্রাজুয়েট কোর্সগুলো তিন বছরের হয়ে থাকে। পড়াশোনার সময় শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খন্ডকালীন কাজ করতে পারবেন।
পড়াশোনা শেষ করে শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ফেরত আসতে হবে। তবে সেখানে মাস্টার্স বা অন্য কোন কোর্সে ভর্তি হলে পুনরায় ভিসার আবেদন করে বাড়িয়ে নেয়া বা পরিবর্তন করে নেয়া যেতে পারে।
ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আরো এ সংক্রান্ত পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
আমেরিকার বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। ঢাকায় আমেরিকান সেন্টারে গিয়ে এ ব্যাপারে পরামর্শ ও তথ্য সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
শিক্ষা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইট ‘এডুকেশনইউএসএ’ দেশটিতে ভর্তি, বিশ্ববিদ্যালয়, ডেডলাইন, প্রক্রিয়া সম্পর্কে সকল তথ্য পাওয়া যাবে।
আমেরিকান সেন্টারের ওয়েবসাইটে পড়াশোনার ব্যাপারে পাঁচটি গাইডলাইন দেয়া রয়েছে। এগুলো দেখে পুরো আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা যেতে পারে।
প্রথমেই গবেষণা। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান, আপনার পছন্দের বিষয় সেখানে আছে কিনা, টিউশন ফি কতো, ইংরেজির জন্য আইইএলটিএস,নাকি টোফেল অথবা আর কি প্রমাণ চাইছে ইত্যাদি দেখে বাছাই করতে হবে। এরপর পড়াশোনার খরচ বা বৃত্তির বিষয়টি ঠিক করে নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক হওয়ার পরে অনলাইনেই আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনে সেমিস্টার ফি পাঠাতে হবে। এরপরে ভর্তির সুযোগ পেলে ভিসার আবেদন করতে হবে।
আমেরিকায় একেকটি স্টেট ভেদে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের অনেক তারতম্য হতে পারে।
বিদেশে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠান স্টুডেন্ট ওয়ার্ল্ডের কর্মকর্তা আমরিন কবির বলছেন, ”অস্ট্রেলিয়ার জন্য আইইএলটিএস ও এইচএসসির পরীক্ষার জিপিএ খুব গুরুত্বপূর্ণ দুইটা বিষয়। এর ওপরে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া নির্ভর করবে। এটা যত ভালো হবে, সে তত ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন।”
তিনি বলছেন, ”যদিও প্রকাশ্যে বলা হয় না, তবে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভালো আইইএলটিএসের স্কোরটি অনেকটা ভূমিকা রাখে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন থেকে সবমিলিয়ে এক্ষেত্রে দুই মাসের মতো সময় লাগবে পারে।
তিনি বলছেন, ”জিপিএ কম থাকলে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তির চেষ্টা না করে বরং অস্ট্রেলিয়ায় কোন ডিপ্লোমা কোর্সে যেতে পারেন। সেটা সম্পন্ন করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঙ্ক্ষিত কোর্সে ভর্তিতে সুবিধা পেতে পারেন।”
সায়েন্স, প্রকৌশলের মতো বিষয় আইইএলটিএসের সাত স্কোর থাকা দরকার হবে।
”এই মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক স্কলারশিপ রয়েছে। একটু ভালো পারফর্মেন্স দেখাতে পারলে সেগুলো পাওয়া সম্ভব।” তিনি বলছেন।
আমরিন কবির বলছেন, ”অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা চলার সময় শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম আর ছুটির সময় ফুলটাইম কাজ করতে পারেন। আবার পড়াশোনা শেষ করে সেখানে নিয়ম মেনে চাকরি ও পরবর্তীতে স্থায়ী হওয়ারও সুযোগ হতে পারে।
কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে আইইএলটিএস অবশ্যই থাকতে হবে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে ভর্তি তথ্য, আবেদনের প্রক্রিয়াসহ সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে থাকে। সকল কাগজপত্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি অগ্রিম পাঠাতে হবে।
তারা শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাঠানো হয়। এরপর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
সেখানেও পড়াশোনা করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসাবে চাকরি ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার খরচ অনেকটা বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচের মতোই।
বাংলাদেশসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারত সরকারের নানা স্কলারশিপ রয়েছে। ঢাকার ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।
গত কয়েক বছর ধরে অনেক বাংলাদেশি চীনে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। ঢাকার বেশ কিছু শিক্ষার্থী সহায়ক প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে। তবে চীনে পড়তে গেলে আগে চীনা ভাষা শিখতে হবে। ঢাকায় এখন এরকম বেশ কিছু ভাষা শেখানোর প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
চীনে পড়াশোনা করে এসে এখন ঢাকার একটি চীনা মোবাইল ফোন কোম্পানিতে কাজ করছেন মোঃ. মুরাদ খান। তিনি বলছেন, ” আমি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চীনা ভাষা শেখার পরে চীনের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছিলাম। তার একটিতে বৃত্তির সুযোগ পাওয়ায় চীনে গিয়ে চার বছর পড়াশোনা করেছি।”
তিনি জানান, বিদেশি শিক্ষার্থী হিসাবে সেখানে খাবারে খাপ খাওয়াতে খানিকটা সমস্যা হলেও পড়াশোনার সুযোগ, মান এবং থাকার ব্যবস্থা খুবই ভালো।
জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ও জার্মান ভাষায় পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন টিউশন ফি দিতে হবে, আবার জার্মান ভাষার অনেক প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে এখনো জার্মানিতে বিনা বেতনে পড়াশোনা করার সুযোগ রয়েছে। তবে সেজন্য জার্মান ভাষার দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।
জার্মানিতেও পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ রয়েছে। পড়াশোনা শেষে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতিও পাওয়া যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি, প্রোগ্রাম তথ্যসহ সকল তথ্য পাওয়া যাবে এবং আবেদন করা যাবে।
ঢাকার গ্যেটে ইন্সটিটিউটে জার্মান ভাষা শেখা যেতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মালয়েশিয়াতে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস রয়েছে সেখানে।
নরওয়ে এবং ফিনল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়ার খরচ মেটাতে স্কলারশিপও পাওয়া যেতে পারে।
সুইডেনে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে ভর্তি করা হয়। সেখানে আবেদন করার পর যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত হবে।
বাংলাদেশ থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, শ্লোভাকিয়াসহ অনেক দেশে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন।
এক্ষেত্রে যারা ইংরেজি ভাষায় পড়তে চান, তাদের আগেই দেখে নিতে হবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষায় কোন কোর্সগুলো রয়েছে।