পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় অটোরিক্সা চালক লতিফুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে লতিফুলের মোবাইল ফোন এবং অটো রিক্সার বিভিন্ন অংশ।
বুধবার (২২শে ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিং-এর মাধ্যমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস. এম সফিকুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, তিনজনে মিলে লতিফুল কে হত্যা করে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আরেকজন পলাতক রয়েছে। লতিফুলের অটোরিক্সা ছিনতাই করার উদ্দেশ্যেই তাকে হত্যা করে ঘাতকরা। পরে অটোরিক্সাটি ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে তারা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বোদা উপজেলার সাইমনপাড়া এলাকার মকছেদ আলীর ছেলে সোহেল রানা (২০), একই উপজেলার সুভাসুজন ঝেরঝেরিয়াপাড়া এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে মেহেদী হাসান মিলন(১৯), নয়াদিঘী কান্তমনি বাসডাঙা এলাকার হাসান আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম(৪০), সাকোয়া বীরপাড়া এলাকার মৃত শাহাদাত আলীর ছেলে রবিউল আলম (২৮), বোদা ইসলামবাগ এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে রিংকু ইসলাম (৩৩) এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার বাজারপাড়া এলাকার মানোয়ারুল হকের ছেলে মাজেদুল হক(৩০)। এদের মধ্যে সোহেল এবং মেহেদী হাসান মিলন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত। বাকী চারজন চোরাই অটোরিক্সা ক্রয়কারী।
প্রেসব্রিফিং-এ জানানো হয়, ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া আসামীদের স্যান্ডেল এবং মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছে ভিকটিমের মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা নিজেদের দোষ স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, গ্রেফতার হওয়া সোহেল রানা ছিলো লতিফুলের পরিচিত। সেই সুবাদে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বলে সোহেল এবং মেহেদী লতিফুলের অটোরিক্সা ভাড়া নেয়। পরে বেংহারী ইউনিয়নের ফুলতলা-মাড়েয়া সড়কের পাশে একটি বাদাম ক্ষেতে লতিফুলকে শ্বাসরোধে হত্যা করে অটোরিক্সাটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পরে অটো রিক্সাটি ১৬ হাজার টাকায় রবিউল ইসলামের কাছে বিক্রি করে। রবিউল এটি নিশ্চিহ্ন করতে রবিউল আলমকে দেয়। রবিউল আলম আবার প্রতিটি পার্টস আলাদা করার জন্য রিংকু এবং মাজেদুলকে দেয়।
এর আগে, গত ১৮ই ডিসেম্বর উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের বোয়ালমারী এলাকার একটি বাদাম ক্ষেত থেকে লতিফুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লতিফুলের মামা নুর ইসলাম বাদী হয়ে একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলা দায়ের করেন।
লতিফুল ইসলামের বাড়ি একই উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মাগুরপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত খামির উদ্দীন।