শরীয়তপুরে নামের ভুলে লিটন সিকদার সেজে কারাগার থেকে জামিনের কাগজপত্রে বের হয় লিটন ফরাজি (২৮) নামের অন্য এক আসামি। এ ঘটনায় কারা মহাপরিদর্শক মোমিনুর রহমান ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। তাকে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শকের দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া কারাগারের জেলার আমীরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি চিঠি শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পৌঁছায়। এর আগে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে কারারক্ষী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান ডেপুটি জেলারকে বরখাস্ত ও জেলারকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শরীয়তপুর জেলা কারাগার সূত্র জানায়, গোসাইরহাট থানার একটি চুরির ঘটনার মামলার আসামি লিটন ফরাজি ও লিটন সিকদার। তারা দু’জন রাজবাড়ী ও খুলনার দুটি মামলারও আসামি। লিটন ফরাজি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দামুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। আর লিটন সিকদার খুলনার খালিশপুরের বাসিন্দা। গত ১১ মার্চ তাদের শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আনা হয়।
গত ৪ এপ্রিল শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে গোসাইরহাট থানার ওই মামলায় তাদের জামিন দেয়া হয়। আর খুলনা ও রাজবাড়ীর মামলায় লিটন সিকদার জামিনে থাকলেও লিটন ফরাজি জামিনে ছিলেন না। আদালত থেকে ওই জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে কারা কর্তৃপক্ষ লিটন সিকদারকে না ছেড়ে লিটন ফরাজিকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়। লিটন সিকদারকে আটক রাখা হয়। লিটন সিকদারের স্বজনেরা বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাদের নজরে আসে নামের ভুলে লিটন ফরাজি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। পরে ৫ এপ্রিল রাতে লিটন সিকদারকে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। এদিকে ভুল তথ্যে ছেড়ে দেয়া লিটন ফরাজিকে এখনো খুঁজে পায়নি কারা কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় ৫ এপ্রিল পালং মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শরীয়তপুর কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষকে জানান শরীয়তপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার গোলাম হোসেন। কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্তের জন্য বরিশাল বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ৬ এপ্রিল তারা শরীয়তপুর জেলা কারাগার পরিদর্শন করে ঘটনাটির তদন্ত করে।