বিদেশি এনজিও কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা করার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং ডিভিশন।
কানাডিয়ান কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (সিসিআইসি) নামে বিদেশি এনজিও’র কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া মো. রুবেল আহম্মেদ ওরফে হেলিকপ্টার রুবেল নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার সিটিটিসি’র দলটি।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সিটিটিসি’র পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে সিটিটিসি’র টিমটি রাজধানীর উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে মো. রুবেল আহম্মেদ (৩৬) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।
সিটিটিসি’র পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত রুবেল সহযোগীদের নিয়ে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও দরিদ্র লোকের তালিকা প্রস্তুত এবং তাদের আবাসন প্রদান, স্কুল নির্মাণ, নদী ভাঙন রক্ষাবাঁধ নির্মাণ, কৃষকদের মাঝে গভীর নলকূপ প্রদান ও দুস্থদের চিকিৎসা সাহায্যসহ বিভিন্ন সেবামূলক আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থা করার কথা বলে ১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার প্রজেক্ট প্রস্তুত করেন।
এ সংক্রান্তে প্রজেক্ট পার্টনার, প্রজেক্ট ও স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুয়া ফান্ডের টাকা ছাড়ের জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ হিসেবে ট্যাক্স ও অন্যান্য খরচ বাবদ ৪৩ লাখ টাকাসহ কোটি টাকার উপরে প্রতারণা করে আত্মগোপন করে। এ সংক্রান্তে ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছর ৬ জানুয়ারি। বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা রুজু হয়।
মামলা তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযুক্তের অবস্থান সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে সিটিটিসি। রোববার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ২ টা ৪৫ মিনিটে বিমানবন্দর থানার উত্তরা ১৮ নং সেক্টর থেকে তাকে গ্রেফতার করে ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের ইকোনমিক ক্রাইম এন্ড হিউম্যান ট্রাফিকিং টিম।
এ সময় তার হেফাজতে থাকা প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, একাধিক মোবাইল, সিমকার্ড, ভ্যাট প্রদানের নির্দেশপত্র, কোটেশন গ্রহণপূর্বক কাজের অনুমোদন প্রদানের কপি, অনলাইনে কর পরিশোধ পদ্ধতি সংক্রান্ত ভুয়া কাগজপত্র, বিভিন্ন লোকের ছবি ও এনআইডির ফটোকপি সংযুক্ত করা অনুদান প্রাপ্তির ফাঁকা আবেদন ফরম, বিভিন্ন লোকের ছবি ও এনআইডির ফটোকপি সংযুক্ত করা চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন, দুস্থদের ঘর প্রদানের নামের তালিকা, সিসিআইসি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন কমিটির তালিকা, ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য ক্রয়ের অনুমোদনপত্র ও বিল ভাউচার, কানাডিয়ান কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (সিসিআইসি) এর আর্থিক বিবরণীসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করাই তার পেশা। মানুষের বিশ্বাস স্থাপনের জন্য যাতায়াতের ক্ষেত্রে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন।
কুষ্টিয়া, মাগুরা, খাগড়াছড়িসহ কয়েক জেলা থেকে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতকে পুলিশ রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।