বোলাররা চাপে ফেলেও ফায়দা তুলতে পারলেন না খুব বেশি। আফগানিস্তান পেয়ে যায় বেশ ভালো সংগ্রহ।
রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশ অবশ্য কক্ষপথেই ছিল লম্বা সময়। কিন্তু তরুণ স্পিনার আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফরে দিশেহারা হয়ে যায় তারা।
শারজাহতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশকে ৯২ রানে হারিয়েছে আফগানিস্তান। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২৩৫ রানে অলআউট হয় আফগানরা। বাংলাদেশ রান তাড়ায় করে ১৩৫ রান।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশকে শুরুতেই উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার রহমানউল্লাহ গুরবাজ তার বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। তাসকিন বোলিংয়ের শুরুটা করেছিলেন শরিফুল ইসলামের সঙ্গে।
অষ্টম ওভারে গিয়ে তাসকিনকে সরিয়ে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত নিয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমানকে। বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেয়ে যান মোস্তাফিজ। ১২ বলে ২ রান করা রহমত শাহ ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে।
এখানেই থামেননি মোস্তাফিজ, নিজের পরের ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। প্রথমে ফেরান থিতু হতে থাকা সাদিকুল্লাহ আতালকে। ৩০ বলে ২১ রান করা এই ব্যাটার হন এলবিডব্লিউ। দুই বল পর আজমতউল্লাহ ওমরজাই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।
দুই ওভারে মোস্তাফিজ তিন উইকেট এনে দেওয়ার পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আফগানিস্তান। গুলবাদিন নাইব ও হাশমাতুল্লাহ শহিদী ৬১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন। এই জুটি ভেঙে দেন তাসকিন আহমেদ। তার বলে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন ৩২ বলে ২২ রান করা নাইব।
৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান। কিন্তু এবার শক্ত হাতেই দলের হাল ধরেন শহিদী ও মোহাম্মদ নবী। এই দুজনের জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকে আফগানিস্তান। দুজনেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।
জুটির সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর এটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১২২ বলে ১০৪ রানের এই জুটি ভাঙেন তিনি শহিদীকে বোল্ড করে। ৯২ বলে ৫২ রান করে ফেরেন হাশমাতুল্লাহ। ঝড়ো ব্যাটিং শুরুর আগেই রশিদ খানকে ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ।
তাকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট পান শরিফুল। ১১ বলে ১০ রান করেন রশিদ। কিন্তু কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছিল না মোহাম্মদ নবীকে। তাকে ৪৮তম ওভারে গিয়ে আউট করেন তাসকিন। তার বলে তানজিদ তামিমের হাতে ক্যাচ দেন নবী। এর আগে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৮৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
কিন্তু শেষদিকে আফগানিস্তানের রান আরেকটু বাড়িয়ে দেন নাগাইলি খারোতে। ২৮ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান দুজনেই চার উইকেট করে পান। তবুও লড়াই করার মতো পুঁজি পায় আফগানিস্তান।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিদায় নেন তানজিদ হাসান তামিম। আল্লাহ গজনফরের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তার বিদায়েও অবশ্য তেমন চাপে পড়েনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৪ বলে ৫৩ রান করেন সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বাউন্সারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৫ বলে ৩৩ রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে আউট হন। ৬৮ বলে ৪৭ রান করে মোহাম্মদ নবীর বলে ক্যাচ দেন তিনি।
তার বিদায়ের পরও বাংলাদেশ খুব একটা পথ হারায়নি। ৩ উইকেটে তখন বাংলাদেশের রান ১২০। কিন্তু পরের ২৩ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এর মধ্যে ৫টিই নেন আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার। স্রেফ ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন তিনি।
৬ ওভার ৩ বল হাত ঘুরিয়ে ২৬ রান দিয়ে ছয় উইকেট নিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী গজনফর। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ হয়ে থেকেছে অধিনায়ক শান্তর রানই।