রাজধানীর অলি-গলির রাস্তাগুলো চরম দুর্দশাতেও ভ্রুক্ষেপ নেই ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের। বছরের পর বছর বাজেট না থাকার অজুহাত। রাস্তার সংস্কার না হলেও নিজেদের অর্থনৈতিক সংস্কার হচ্ছে ঠিকই। তাছাড়া বেশিরভাগ ওয়ার্ড কাউন্সিলরই নিয়ন্ত্রণ করে সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারি।
রাস্তা ঠিক করে ওয়ার্ডবাসীকে সন্তুষ্ট করতে না পারলেও ঊর্ধ্বতনদের সন্তুষ্টির কৌশল ঠিকই রপ্ত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফোরকান হোসেন।
আগারগাঁওয়ের রাস্তার বেহাল দশা, রাস্তার ওপরে দোকান বসানো, জ্বালানি তেলের অবৈধ ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন কাউন্সিলর ফোরকান। তবে যুক্তি দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের কৌশলও ছিল জোরালো।
কাউন্সিলর ফোরকান বলেন, সরকার আমাদের প্রতি বছর ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ঠিকাদারির বিষয়ে বলেন, তার নামে তার মামাত ভাই করছেন ব্যবসা।
ধানমিন্ড ২৭ নম্বর রোডের কাজের ধীর গতির সঙ্গে অনিয়মের অভিযোগ আছে এলাকার সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন স্বপনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, কেউ কাউন্সিলর থাকাকালীন ঠিকাদারি ব্যবসা করতে পারবেন না। এটা সম্পূর্ণ নিষেধ।
কিছু কাউন্সিলরের এমন অপকর্মে সরকারের সমালোচনা হয় বলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কথা বলেন অন্য কাউন্সিলররা। এ বিষয়ে কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বলেন, যারা রাস্তাগুলোর এই ড্রেনেজ সিস্টেম এবং টাইলসের কাজ করছেন তারা কিন্তু আমাদের কাছে জবাবদিহি করে যায় না। তারা কোনোরকম কাজটা শেষ করে নগর ভবন থেকে বিল তুলে নিয়ে যায়।
নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিবের মতে, এলাকার রাস্তা সংস্কারে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের দৌরাত্মরোধে পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের দৌরাত্ম অথবা অপ্রয়োজনীয় খোঁড়াখুঁড়ির মধ্য দিয়ে জন-দুর্ভোগ তৈরি করতে দেখি। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কার অথবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে এসমস্ত খিঞ্জি এলাকাগুলোর উন্নয়ন দেখছি না।
জন-ভোগান্তি ও রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়-রোধে রাজধানীর রাস্তা মেরামতে প্রভাবশালীদের অপতৎপরতা রুখে দেয়া জরুরি বলেও মন্তব্য ছিল এই নগর পরিকল্পনাবিদের।