নাকে মুখে ঢালা হয় গরম পানি। ঘোরানো হয় চরকির মতো। নারায়ণগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে কথিত ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় এভাবেই। বিচারবিভাগীয় তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন লোমহর্ষক বিবরণ। রিপোর্টে তদন্ত কর্মকর্তার শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
গত ৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী দিসামনি নিখোঁজ হন। এর এক মাস পর দিসার বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব এবং খলিল নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
দুই দফা রিমান্ড শেষে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে বলা হয়, দিসাকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয় তারা। আসামিদেরকে পাঠানো হয় জেলে। কিন্তু ২৩ আগস্ট ফিরে আসে দিসা।
প্রশ্ন ওঠে, কেন আসামিরা হত্যা ও ধর্ষণের দায় স্বীকার করলেন? তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) সেই রিপোর্ট আদালতে দাখিল করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, নির্যাতন করে এবং ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার স্বীকারোক্তি নেয় পুলিশ।
বিভিশন দায়েরকারী আইনজীবী শিশির মনির বলেন, তাদেরকে থানায় রিমান্ডে নিয়ে গরম পানি দিয়েছে, বেঁধে রাখা হয়েছে। একজন বলেছেন, তাকে চোরকির মতো ঘুরানো হয়েছে এবং পা উপরের দিকে দিয়ে মাথা নিচে দিয়ে গরম পানি ঢালা হয়েছে।
উচ্চ আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এই জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচার হলে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হতে পারতো। বিচারকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, ইন কার্লফিউটারি কনফিউশন, ভলান্টিয়ারি প্রুপ হলে আসামিদের ফাঁসি হয়ে যেতো।
বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে দিশামিনকে ধর্ষণ ও অপহরণের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এ বিষয়ে ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।