৪২ দিন বয়সী শিশু রুকাইয়া হত্যার চার দিন পর জানা গেছে, মা হিমা আক্তার গলা টিপে তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেন। মঙ্গলবার আদালতে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার হিমা। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এসএম মাহফুজ আলম তার জবানবন্দি রেকর্ড করছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মো. মিজান।
হিমা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী। দেলোয়ার ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। হিমা তিন বছরের এক ছেলে ও মেয়ে রুকাইয়াকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, হিমা নিহত রুকাইয়াকে নিয়ে একই উপজেলার উমেদ আলী গ্রামে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে রুকাইয়া নিখোঁজ হয়। পরবর্তী সময়ে বাড়ির পুকুর থেকে রুকাইয়ার লাশ উদ্ধার হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
খবর পেয়ে ঢাকা থেকে ছুটে আসেন নিহতের বাবা। ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্ত শুরু করা হলে কোনোভাবেই ক্লু মিলছিল না। তদন্তকালে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হয়। এ জন্য নিহতের কাছের আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সর্বশেষ গত সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমা আক্তারকে থানায় নিয়ে আসেন। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রুকাইয়াকে গলা টিপে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন হিমা।
তবে কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড সে সম্পর্কে হিমা একেক বার একেক ধরনের কথা বলেছেন। একবার বলেছেন, অতিরিক্ত কান্নাকাটি করায় ক্ষুব্ধ হয়ে গলা টিপে ধরলে রুকাইয়া মারা যায়। আবার বলছেন, স্বপ্নে জিন তাকে নির্দেশ দেওয়ায় সন্তানকে হত্যা করেন।
তবে জবানবন্দির রেকর্ড পাওয়ার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান ওসি।