আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তি কমিয়ে দিয়ে মুক্তি দেয়ার জেরে দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ধর্ষণের বিচার সংক্রান্ত আইনে পরিবর্তন নিয়ে আসার ব্যাপারেও আওয়াজ জোরালো হচ্ছে।
২০১৩ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম সিওলের আনসান এলাকায় স্কুলে যাওয়ার পথে এক কন্যাশিশুকে অপহরণ করে স্থানীয় গির্জার টয়লেটে নিয়ে ধর্ষণ করে চো ডো সোন নামক এক ব্যক্তি। এসময় তাকে বেধড়ক মারধরও করা হয়।
শিশুটি প্রাণে বেঁচে গেলেও মানসিকভাবে ব্যাপক ভেঙে পড়ে। সেই রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি শিশুটি। শারীরিকভাবেও জটিলতা কাটেনি তার।
এদিকে ধর্ষক চো ডো সোন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গেছে। ভুক্তভোগীর বাড়ির মাত্র শূন্য দশমিক ছয় কিলোমিটার দূরে তার বসবাস। এ নিয়ে মানসিকভাবে আবারো ভেঙে পড়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী সেই শিশুটির (বর্তমানে তরুণী) বাবা জানান, আমরা এখান থেকে পালিয়ে যেতে চাই না। কিন্তু এছাড়া উপায়ও নেই। আমি সবাইকে বলতে চাই- সরকার কিছুই করেনি কিন্তু ভুক্তভোগীকে আড়ালে চলে যেতে বাধ্য করছে।
তিনি আরো জানান, আমার মেয়ে এখান থেকে চলে যেতে নারাজ। কারণ, সে তার কাছের বন্ধুদের ফেলে অন্য জায়গায় যেতে চায় না। পরিবারের সবাই অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার ব্যাপারে নিজেদের পরিচয় নিয়ে উদ্বিগ্ন আছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে, তাদের সামনে এটাই একমাত্র পথ। বহু বছর পার হলো, কিন্তু কিছুই পরিবর্তন হলো না। দায় এখনো পুরোপুরি ভুক্তভোগীর কাঁধেই পড়ছে।
এদিকে চো ডো সোন মুক্তি পেতেই দক্ষিণ কোরিয়ায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। তার বিচার পুনরায় করা এবং সমাজ থেকে উঠিয়ে নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে ছয় লাখের বেশি মানুষ সে দেশের প্রেসিডেন্ট বরাবর এক পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে।
গত ১২ ডিসেম্বর ধর্ষক চো ডো সোন মুক্তি পেয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফিরে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। এরপর ধর্ষণের বিচার সংক্রান্ত আইন পরিবর্তন নিয়ে আওয়াজ জোরালো থেকে জোরালোতর হচ্ছে।