ধর্ষণের শিকার নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী অপমানের গ্লানি সইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। দীর্ঘ ১৮ দিন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে শুক্রবার মারা যায় সে।
পুলিশ, মামলার আইও এবং মেয়েটির বাবা জানান, শেরপুর জেলা সদরের চান্দের নগর গ্রামের জনৈক চান মিয়ার পুত্র নাজমুল (২৮) যোগানিয়া ইউনিয়নের কুত্তামারা গ্রামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ করত।
গত ১৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল জব্বার তার মেয়েকে ঘরে একা রেখে পাশের বাজারে চা পান করতে যান। মেয়েটির মা ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বখাটে নাজমুল সুযোগ বুঝে ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটির চিৎকারে নাজমুল পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাবার সময় তাকে কেউ কেউ দেখে ফেলে।
পরদিন ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার লোকজন ‘মেয়ের কলঙ্ক হবে, ভবিষ্যতে বিয়ে দিতে পারবে না’—এমন সব কথা বলে মেয়ের বাবাকে পুলিশের কাছে যেতে বাধা দেয় এবং স্থানীয়ভাবে বিষয়টির মীমাংসার উদ্যোগ নেয়। কয়েক দিন যেতেই এলাকার কিছু মানুষ মেয়েটিকে ঘটনার জন্য ভর্ৎসন করে কথাবার্তা বলতে থাকে। এই অপমান সইতে না পেরে ধর্ষণের ২৫-২৬ দিন পর গত ২১ ডিসেম্বর মেয়েটি বিষপান করে। এ অবস্থায় তাকে প্রথমে নালিতাবাড়ী এবং অবস্থার অবনতি হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। কিন্তু পরদিনই মেয়েটি আবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার মারা যায় মেয়েটি।
গত ২ জানুয়ারি মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ নালিতাবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে নাজমুলের দুই ভাই সুলতান মিয়া ও লাল মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ওসি বছির আহমেদ বাদল বলেন, মেয়ের বাবা বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন। সহযোগী দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছি। প্রধান আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।