৪৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আলোচিত সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার দুদকের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয়। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্রমতে, একটি মামলায় জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী ও রাতুল টেলিকমের চেয়ারম্যান সৈয়দা আরজুমান বানু, তার মেয়ে ও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এস আমরীন রাখিকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৯ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার ১৫৮ টাকা বা ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮১ মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা আনয়নযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে অপরাধ করেছেন।
আরেক মামলায় সাবেক সংসদ-সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে তার স্ত্রী ওকে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমা ওসমান ও তার প্রতিষ্ঠানের এমডি তানভীর আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার বা ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা বিটিআরসির আইজিডবি্লউ লাইসেন্সধারী অপারেটর হিসাবে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ টাকা আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল মিনিটের মূল্য বাবদ অর্জিত ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার (বৈদেশিক মুদ্রা) পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন।
সূত্রমতে, শামীম ওসমান ২০২৪ সালে হলফনামায় নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচয় দেন। তার মোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ৫টি। জ্বালানি তেল আমদানি, পরিবহণ ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেডএন করপোরেশন, জেডএন শিপিং লাইনস লিমিটেড, মাইশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, খান ব্রাদার্স ইনফোটেক ও উইসজম নিটিং মিলসকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসাবে উলে্লখ করেছেন। বিগত দিনে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুদকের দুটি মামলাসহ ১৭টি মামলা হয়েছিল যার মধ্যে কয়েকটি মামলা হাইকোর্টে স্থগিত রয়েছে। বেশকিছু মামলা রাষ্ট্র প্রত্যাহার করে এবং কয়েকটিতে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
অনেদিকে, গত বছরের ২২ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।