তথ্য গোপন করে ও অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ১০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করায় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ওই নেতার নাম মঞ্জুরুল আলম মোহন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক।
মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুদকের বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে মামলাটি করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর বাদুড়তলা এলাকার মৃত শাহ আলমের ছেলে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহন ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট সম্পদের বিবরণী জমা দেন। সেখানে তিনি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৫ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা দেন। এ ছাড়া অসাধু উপায়ে অর্জিত ও তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখেন।
সম্পদের বিবরণীতে জমি ক্রয়, অবকাঠামো নির্মাণ/ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ ও ফ্ল্যাট ক্রয়সহ মোট চার কোটি ৫১ লাখ ৭৪ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ এবং গণপরিবহন হিসেবে পরিচালিত ১৩টি বাস ও দুটি মোটরসাইকেল ক্রয়, শেয়ার ক্রয়, দোকানঘর লিজ গ্রহণ, স্বর্ণ, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ব্যাংকে ডিপিএস ও চলিত হিসাবের অনুকূলে স্থিতিসহ মোট ১১ কোটি পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৬ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১৫ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৭৪৬ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। এখানে তিনি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার ৩৮৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করায় দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় অপরাধ করেছেন।
এ ছাড়া সম্পদ বিবরণী যাচাই/অনুসন্ধানে ১৫ কোটি ৮১ লাখ ৪৫ হাজার ১৩১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। মঞ্জুরুল আলম মোহন ১৯৯১-৯২ ও ২০১৯-২০ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথিতে বই বিক্রিসহ বিভিন্ন খাতে সাত কোটি ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭১৬ টাকা আয়ের তথ্য পাওয়া যায়। তার ৪২ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭০ টাকার দায়-দেনার তথ্য মেলে। এ ক্ষেত্রে আসামির আট কোটি ২০ লাখ ৪৯ হাজার ২৮৬ টাকার গ্রহণযোগ্য উৎসের আয় পাওয়া যায়। বাকি ৯ কোটি ৮৭ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখায় দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অপরাধ করেছেন। যেগুলোর আয়ের উৎস পাওয়া যায়নি।
মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম জানান, মঞ্জুরুল আলম মোহন দুদক আইন ২০০৪এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় মামলা করা হয়েছে। বুধবার এজাহারটি আদালতে পাঠানো হবে।