সোবহানা মোস্তারি আউট হয়েছেন, নিশ্চিত হওয়ার পরই হাঁটুগেড়ে বসে পড়লেন। দীর্ঘদিন ধরে তার রান খরা নিয়ে কথা উঠছে।
এই ম্যাচে তিনি লড়েছেন অনেকটা একা, হয়তো শেষ করতে না পারার অথবা ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপ তার। কিন্তু বাংলাদেশের লম্বা সময়ের ব্যাটিং সমস্যাটা কাটেনি এখনও। দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও শেষ অবধি তাই হারই জুটেছে ভাগ্যে।
শনিবার শারজাহতে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশকে ২১ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১১৮ রান করে ইংলিশ মেয়েরা। পরে ৭ উইকেটে ৯৭ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে ম্যাচ জিতেছে ইংল্যান্ড।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশকে ভালোই চাপে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৭ রান করে বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে গিয়ে প্রথম উইকেটের দেখা পায় তারা।
রাবেয়া খানের বলে সুইপ করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন মায়ায়া বাউচিয়ার। ১৮ বলে ২৪ রান করেন তিনি, ভাঙে ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন ফাহিমা খাতুন। নাট স্কাভিয়ের ব্রান্টকে এলবিডব্লিউ করেন ফাহিমা খাতুন।
তৃতীয় উইকেটের জন্যও লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত বল করা রিতু মণি উইকেট পান এবার। ৭ বলে ৬ রান করা নাইটকে বোল্ড করেন তিনি। নাহিদার করা পরের ওভারে বোল্ড হয়ে যান একপ্রান্ত আগলে রাখা ওয়াটট হজ। পাঁচটি চারে ৪০ বলে ৪১ রান করেন তিনি।
এরপর আর ইংল্যান্ডের মেয়েদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশ। একের পর এক ডট বলে চাপে পড়ে তারা। এর ১৭ বলে ৯ রান করা চিপসিকে আউট করেন ফাহিমা খাতুন। এরপর রাবেয়া খানের বলে ক্যাচ ছেড়ে দেন মারুফা আক্তার।
এরপর শেষ দুই ওভারে ২১ রান নিয়েছে ইংল্যান্ড। দুই বল খেলা ইকলেস্টোন ছক্কা হাঁকিয়েছেন একটিতে। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে স্রেফ ১৮ রান দিয়ে ফাহিমা দুটি ও সমান ওভারে ১৫ রান দিয়ে এক উইকেট পেয়েছেন রাবেয়া। দুই উইকেট করে পেয়েছেন নাহিদা আক্তার ও রিতু মণিও।
রান তাড়ায় নেমে শুরু থেকেই তেমন সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম তিন ওভারে ১৬ রান নেওয়ার পর চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে হারিয়ে ফেলে উইকেট। ১২ বলে ৬ রান করে চার্লি ডিনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান দিলারা আক্তার।
পরের ওভারের প্রথম বলে ফেরেন আরেক ওপেনার সাথী রাণীও। ৯ বলে ৭ রান করে ইকালেস্টোনের বলে ক্যাচ দেন তিনি। তার বিদায়ের পর সোবাহানা মোস্তারিকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।
কিন্তু তাদের ৪৪ বলে ৩৫ রানের জুটি ভেঙে যায় রান আউটে। ১২তম ওভারের তৃতীয় বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ২০ বলে ১৫ রান করা জ্যোতি। ৪ বলে ২ রান করে ফেরেন স্বর্ণা আক্তারও।
পরের লড়াইটা সোবহানা মোস্তারির একার। তাজ নেহারের সঙ্গে ২৫ বলে ২৫ রানের জুটিতে কিছুটা সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি। এই জুটিতে ১৭ রানই ছিল সোবহানা মোস্তারির। ইনিংসের ১৯তম ওভারে গিয়ে আউট হন তিনি।
চার্লি ডিনের বলে এলবিডব্লিউ হন ৪৮ বলে একটি চার ও ছক্কায় ৪৪ রান করেন সোবহানা। রিভিউ নিলে দেখা যায়, আম্পায়ারস কলে সাজঘরে ফিরতে হবে তাকে। এরপর বাংলাদেশ করতে পারেনি একশ রানও।