২০২০ সাল করোনা মহামারির কারণে ছন্দহীন হয়ে পড়ে মানুষের সুস্থ–স্বাভাবিক জীবন। আর এই বছরটিতে বিশ্ব এমন কিছু মানুষকে হারিয়েছে যাদের অবদান রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যাঙ্গনে অপরিসীম।
এই তালিকায় রয়েছেন ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদপুরুষ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বলিউডের ইরফান খান, সুশান্ত সিং রাজপুরের মতো অনেকেই।
প্রণব মুখার্জি:
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ও ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি ভারতরত্ন প্রণব মুখার্জি ২০২০ সালে চলে যান না ফেরার দেশে। ৯ই আগস্ট পড়ে গিয়ে আঘাত পান তিনি। এরপর দিল্লির সেনা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় ধরা পড়ে করোনা। ৩১শে আগস্ট ৮৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়:
সিনেমা থেকে নাটক, কবিতা কিংবা আবৃত্তি সবখানেই সমান দক্ষতা ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। কয়েক দশক ধরে অপুখ্যাত এই অভিনেতা তার অভিনয়শৈলী দিয়ে জয় করেছেন দুই বাংলার দর্শকদের মন। গত ৬ই অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হন। প্রায় ৪০ দিন বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ই নভেম্বর ৮৫ বছর বয়সে মারা যান এই কিংবদন্তি।
তাপস পাল:
৬১ বছর বয়সে গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় বাংলা চলচ্চিত্রের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা ও তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য তাপস পালের। স্নায়ু ও রক্তচাপের সমস্যার কারণে মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনেও ছিলেন।
ইরফান খান:
বলিউডের দক্ষ অভিনেতা ইরফান খান দীর্ঘদিন ধরেই লড়ছিলেন ক্যান্সারের সঙ্গে। গত ২৯শে এপ্রিল মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মুম্বাইয়ের ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে মারা যান তিনি।
ঋষি কাপুর:
ইরফান খানের মৃত্যুর শোক না কাটতেই ৩০শে এপ্রিল ওপারে পাড়ি জমান আরেক কিংবদন্তী ঋষি কাপুর। তিনিও ভুগছিলেন ক্যান্সারে।
সুশান্ত সিং রাজপুত:
এবছর সবচেয়ে অবাক করেছে এমএস ধোনি খ্যাত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু। ১৪ই জুন বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তার মরদেহ। এখনও এই মৃত্যু রহস্যাবৃত।
ওয়াজিদ খান:
পহেলা জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৪২ বছর বয়সে মারা যান বলিউডের সঙ্গীত পরিচালক জুটি সাজিদ-ওয়াজিদের, ওয়াজিদ খান ।
সরোজ খান:
যার কোরিওগ্রাফিতে বলিউডের সিনেমা বিশ্বে অনন্য উচ্চতায় গেছে, তিনি সরোজ থান। হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে গত ৩রা জুলাই মৃত্যু হয় তারা। ৪০ বছরের কর্মজীবনে তিনি দুই হাজারের বেশি গানে কোরিওগ্রাফ করেছেন।
এসপি বালাসুব্রমনিয়ম:
গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন বলিউডের কিংবদন্তি গায়ক এসপি বালাসুব্রমনিয়ম। চেন্নাইয়ের হাসপাতালে প্রায় ২ মাস ধরে চিকিত্সাধীন থাকার পর মারা যান এই শিল্পী।
চ্যাডউইক বোসম্যান:
ব্ল্যাক প্যানথারখ্যাত আমেরিকান অভিনেতা চ্যাডউইক বোসম্যান মাত্র ২৩ বছর বয়সে গত ২৮শে আগষ্ট মারা যান। চার বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে যুক্তরাষ্টের লস অ্যাঞ্জেলেসে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় এই সুপারহিরোর।
শন কনারি:
জেমস বন্ড সিরিজের প্রথম সাতটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করা স্কটিশ অভিনেতা স্যার শন কনারি গত ৩১শে অক্টোবর ৯০ বছর বয়সে মারা যান।
কিম কি দুক:
বিশ্বে সমসাময়িক চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়ার কিম কি দুক আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। পরিচালনা, প্রযোজনা ও অভিনয়ে সমান দক্ষ এই মানুষটি ১১ই ডিসেম্বর মারা যান।
কেন শিমুরা:
বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে ‘কাইশ্যা’ নামে পরিচিতি জাপানের কমেডিয়ান কেন শিমুরাও করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯শে মার্চ মারা যান তিনি।