ঢাকার সড়কে জোরে রিকশা না চালানোর অজুহাতে রিকশাওয়ালার ওপর চড়াও হওয়া নারী নেত্রীকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রিকশাওয়ালাকে বেধড়ক মারধরের একটি ভিডিও গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বহিস্কৃত নেত্রী ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ৭নং ওয়ার্ডের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা পদে ছিলেন। তাকে বহিষ্কারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন তালুকদার।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমরা দেখেছি। এর পর তাৎক্ষণিকভাবে সংগঠনের সবাই বসে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি জানান, রিকশাওয়ালাকে পেটানো সুইটি এক-দেড় বছর আগে ওই কমিটিতে পদ পান।
রিকশাওয়ালাকে পেটানোর বিষয়ে সুইটি আক্তার ঢাকায় বিদেশি এক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে সুইটি বলেন, মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
ওই ঘটনায় ‘লজ্জিত’ জানিয়ে সুইটির ভাষ্য, আমি খুবই দুঃখিত। আমার ভুল হয়ে গেছে। এমন কাজ করা আমার একেবারেই ঠিক হয়নি।
দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন সুইটি। তার মতে, দল সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে।
তবে সুইটির দাবি- এই ভিডিও ভাইরাল করার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। দলের বাইরের কিছু মানুষ মারধরের ভিডিও করে তাকে বিপদে ফেলা হয়েছে।
সুইটির মতে, নির্বাচন সামনে রেখে দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার অংশ হিসেবে ভিডিওটি নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। এ ঘটনার পর ফেসবুকে বেশ কিছু ফেক আইডি তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনটিতে তাকে ‘বিএনপি নেত্রী’ আবার কোনটিতে তাকে ‘আওয়ামী লীগ নেত্রী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সুইটির দাবি- ভিডিওর খণ্ডিত অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওতে যেটুকু দেখা গেছে তার আগে কিছু ঘটনা ঘটেছে তা নজরে আনা হয়নি।
মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, বাসায় আমার সন্তান আছে এবং চুলায় রান্না চাপানো আছে-এটি বলার পরও রিকশাচালক তার কথা না শুনে ধীরে ধীরে চালাচ্ছিলেন। এমনকি ভাঙাচোরা জায়গা দিয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন। এতে তিনি রিকশা থেকে পড়ে যান। এমতাবস্থায় মেজাজ হারিয়ে তিনি এমনটি করেছেন।
এই ভিডিও তার সম্মানহানি করেছে দাবি করে সুইটি বলেন, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর পারিবারিক ও সামাজিকভাবে আমি লজ্জার মুখে পড়েছি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তায় দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে রিকশাওলায়াকে বারবার তাগিদ দিচ্ছেন এক নারী (সুইটি)। রিকশাচালকের প্যাডেলের গতি পছন্দ নয় তার।
এ সময় রিকশাচালক জানান, এর চেয়ে বেশি জোরে চালাতে পারবেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারী চড়াও হন চালকের ওপর। শুরু করেন মারপিট। সপাটে থাপ্পড় দিতে থাকেন রিকশাচালককে। গালাগালও করেন।