সারা দেশে আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। মোট ২ কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার শিশু এ কর্মসূচির আওতায় ভিটামিন ‘এ’ খাবে।
এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী প্রায় ২৫ লাখ ৪৭ হাজার শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লাখ আইইউ মাত্রা) এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ ৭ হাজার শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লাখ আইইউ মাত্রা) খাওয়ানো হবে। একই সঙ্গে আন্তঃব্যক্তি যোগাযোগ ও গণমাধ্যমের সহায়তায় জন্মের পরপরই (১ ঘণ্টার মধ্যে) শিশুকে শালদুধ খাওয়ানোসহ প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো এবং শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পরিমাণ মতো সুষম খাবার খাওয়ানো বিষয়ে প্রচারাভিযান চালানো হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ঢাকা শিশু হাসপাতালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সবার সার্বিক সহযোগিতায় দেশব্যাপী ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্রসহ অতিরিক্ত আরও ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রগুলো বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, ব্রিজের টোল প্লাজা, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, খেয়াঘাট ইত্যাদি স্থানে অবস্থান করবে। প্রতিটি কেন্দ্রে কমপক্ষে ২ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া দুর্গম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ১২টি জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি ইউনিয়নে ক্যাম্পেইন পরবর্তী ৪ দিন (১০-১৩ ফেব্রুয়ারি) বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের সার্চিং কার্যক্রম পরিচালনা করে বাদ পড়া শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এ কার্যক্রম সফল করতে ইতিমধ্যে বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা-উপজেলায় অবহিতকরণ সভা এবং সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ২ লাখ ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল। কিন্তু ওষুধের মান নিয়ে সন্দেহ থাকায় সেই কর্মসূচি বাতিল করা হয়। গত ডিসেম্বরে এই ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা থাকলেও বার্ষিক পরীক্ষা, জাতীয় নির্বাচনসহ নানা কারণে তা পিছিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যখন এই কার্যক্রম গ্রহণ করেন তখন ৬-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মাঝে রাতকানা রোগের হার ছিল ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখায় বর্তমানে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের হার শতকরা ১ ভাগের নিচে রয়েছে।