চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর মূল নির্মাণকাজ উদ্বোধন করতে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আগামীকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিবিএম মেশিন দিয়ে এ প্রকল্পের খননকাজের উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
‘কন্সট্রাকশন অব মাল্টি লেন রোড টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল।
এ উপলক্ষে শনিবার (২৩ জানুয়ারি) প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এসময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সেতু বিভাগের সচিব ও জেলা প্রশাসকসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে সিটি মেয়র জানান, কর্ণফুলী টানেলের বোরিং মেশিন চালুর মধ্য দিয়ে খনন কাজের পাশাপাশি লালখান বাজার থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া সুধী সমাবেশে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তার সফর ঘিরে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে গোটা নগরজুড়ে।
প্রসঙ্গত, বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে চীনের সাংহাইয়ের আদালে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে কর্ণফুলীর তলদেশে এই টানেল নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ৩২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য চীন থেকে আনা হয়েছে যন্ত্রপাতি। খননকাজে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রকল্প এলাকার কাছে বসানো হয়েছে ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ সাব স্টেশন।
চার লেইনের তিন দশমিক চার কিলোমিটার দীর্ঘ এ টানেল হবে দুই টিউব সম্বলিত। পূর্ব পশ্চিম প্রান্তে হবে পাঁচ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক।
টানেলের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক।
বাকি ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
এ টানেল একদিকে চট্টগ্রাম শহররে বন্দর এলাকা ও অন্যদিকে আনোয়ারা উপজেলাকে সংযুক্ত করবে। টানেল চালু হলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে। কর্ণফুলীর দুই সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ কমবে বলেও সরকার আশা করছে।
এ টানেল নির্মাণের জন্য গত বছর ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এরপর বাংলাদেশ সেতু র্কতৃপক্ষ, চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) ও অভি অরুপ অ্যান্ড পার্টনার্স হংকং লিমিটেড যৌথভাবে টানেলের কারিগরি ও অর্থনৈতিক সমীক্ষা করে। গত ৩০ জুন সেতু কর্তৃপক্ষ ও সিসিসিসির মধ্যে হয় বাণিজ্যিক চুক্তি।