রাজধানীর চকবাজার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পাঁচদিন পর আনোয়ারের পর অগ্নিদগ্ধ মো. সোহাগ নামে আরও একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান।
সোহাগের মৃত্যুতে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৯ জনে। এই অগ্নিকাণ্ডে আহত যে কজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তার মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হল।
প্রাথমিকভাবে সোহাগের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। সোহাগের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
এর আগে, সোমবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ার হোসেন নামে অগ্নিদগ্ধ একজনের মৃত্যু হয়।
বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ারের মৃত্যু ঘটে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে আরও আটজনের সঙ্গে ভর্তি করা হয়েছিল আনোয়ারকে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ৫৫ বছর বয়সী আনোয়ারের দেহের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
রিকশাচালক আনোয়ারের বাবার নাম আলী হোসেন। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার রায়নগর গ্রামে। কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদের পূর্বপাশে স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন আনোয়ার।
একমাত্র মেয়ে বীথির আবদারে তার জন্য বিরিয়ানী কিনতে সেদিন চকবাজারে গিয়ে আগুনের মধ্যে পড়েছিলেন আনোয়ার।
আগুনের ক্ষত নিয়ে চিকিৎসাধীন বাকি আটজনের খবর জানতে চাইলে ডা. সামন্ত লাল বলেন, একজনও আশঙ্কামুক্ত নন।
তিনি বলেন, কেমিকেল বার্ন কোনো সময় সুপারফিশিয়াল বার্ন হয় না, ডিপ বার্ন হয়। এই রোগীদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।
আগুনের ক্ষত নিয়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি থাকা আটজন হলেন- আইসিইউতে থাকা সোহাগের (২৫) শরীরের ৬০ শতাংশ, রেজাউলের (২১) শরীরের ৫১ শতাংশ, জাকিরের (৩৫) শরীরের ৩৫ শতাংশ, মোজাফফরের (৩২) শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়েছে।
ওয়ার্ডে থাকা হেলালের (১৮) শরীরের ১৬ শতাংশ, সেলিমের (৪৪) শরীরের ১৪ শতাংশ, মাহমুদুলের (৫২) শরীরের ১৩ শতাংশ এবং সালাহউদ্দিনের (৪৫) শরীরের ১০ শতাংশ পুড়েছে।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে সোমবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়।