৩০ হাজার টাকায় নিজের ১৩ বছর বয়সী মেয়েকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রি করার সময় এরশাদ আলী (৩৫) নামে পাষণ্ড পিতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় শিল্লী (৩৫) নামের এক যৌনকর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে যৌনপল্লী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিল্পীর কাছে নিজের মেয়েকে বিক্রি করছিল এরশাদ আলী।
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই ওলিয়ার রহমান বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুই আসামির বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতার হওয়া পাষণ্ড পিতা এরশাদ আলী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আজগর সোনার ছেলে ও শিল্পী নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার পাংগা চৌপটি গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে।
কিশোরী জানায়, তার বাবা মায়ের অনেক আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বাবা ও মা দুজনই আবার বিয়ে করে নতুন সংসার করছে। সে কখনো দাদির কাছে, কখনো ফুপুর কাছে আবার কখনো মায়ের কাছে থাকতো।
এ পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে বলে, ‘তোমার খাওয়ার খরচ দিয়ে আমি তোমাকে ঢাকায় ভালো একটি জায়গায় রেখে দিব, সেখানে তুমি ভালো থাকবে।’ বাবার কথায় রাজি হয়ে গত শনিবার সে বাবার সঙ্গে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু তার বাবা তাকে ঢাকা না নিয়ে সরাসরি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
এ সময় সে তার বাবার বিচার চায় কিনা জানতে চাইলে কিশোরী কান্না করতে করতে বলে, ‘আব্বু ভুল করে ফেলেছে। আব্বুকে ভালো হওয়ার জন্য একবার সুযোগ দেন স্যার।’ এ সময় এক নরপশু পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা দেখে উপস্থিত সকলের মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সে কোথায় যেতে চায় জানতে চাইলে সে জানায়, ‘আমি আমার মার কাছে যেতে চাই।’
এরশাদ আলী ও যৌনকর্মী শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বাবা এরশাদ আলীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যাতায়াতের সূত্র ধরে যৌনকর্মী শিল্পীর সঙ্গে পরিচয়। এরশাদ আলী শিল্পীকে প্রস্তাব দেয় একটি মেয়ে এনে দিলে তাকে ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু শিল্পী তাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। এই ৩০ হাজার টাকার জন্যই এরশাদ আলী তার মেয়েকে যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. এজাজ শফী জানান, প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশের একটি দল শনিবার দিনগত রাতে ছদ্মবেশে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় হাতেনাতে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তথ্যসূত্রঃ সময় টিভি অনলাইন