হঠাৎ করে কিছুদিন যাবত ১২ বছরের মেয়ের পেট বড় হতে দেখে মা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে বলেন। আলট্রাসনোগ্রাফি করানো হলে রিপোর্টে ধরা পড়ে মেয়ে ২৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, ওসমান ওরফে হামা নামে প্রতিবেশী নানা তার সঙ্গে জোর করে খারাপ কাজ করেছিল।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খন্দকবাড়িয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে। এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে মিরপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্কুলছাত্রীর মা বলেন, মেয়ের পেট মোটা হয়ে যাচ্ছে দেখে প্রথমে সন্দেহ করি কিডনির সমস্যা। সে জন্য রোববার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ডাক্তার জানালো আমার একমাত্র মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। পরে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলে সব ঘটনা সে আমাকে বলে। আমরা অনেক গরিব মানুষ। শোনার পর কী করব কিছু বুঝতে পারছি না। আমি মানুষরূপী ওই পিশাচের শাস্তি চাই।
মিরপুর সাদ আলী ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রাইভেট হসপিটালের সনোলজিস্ট মজিবুর রহমান বলেন, মেয়েটি তার মায়ের সঙ্গে এসেছিল। পরীক্ষা করে দেখি মেয়েটি ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
পারিবারিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটি মিরপুর মডেল পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সে তার পরিবারের সঙ্গে উপজেলার খন্দকবাড়িয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাস করে। কিছুদিন আগে তার মা বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে বাড়িতে ঢুকে একই আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা সম্পর্কে প্রতিবেশী নানা ওসমান ওরফে হামা (৫৫) জোর করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ফলে মেয়েটি ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের চিকিৎসক ফারহানা আফরোজ চমন বলেন, ১২ বছরের মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হতে পারে। তবে মেয়েটির ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, সেটা খুবই পীড়াদায়ক।
এদিকে খন্দকবাড়িয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে ওসমানের সন্ধানে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই সন্তানের জনক ওসমান মাছ ব্যবসায়ী। এ খবর জানাজানি হওয়ার পর সে গা ঢাকা দিয়েছে। লম্পট ওসমান ওরফে হামার বাড়ি নওগাঁ জেলায়।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মেয়ের মা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ওসমান গা ঢাকা দিয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।