নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় একটি ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় ৪৫ জন নারী-পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশুসহ ৬২ জনকে দুইদিন একটি ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পরে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহযোগিতা চাইলে কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গিয়ে বুধবার (০৩ এপ্রিল) রাতে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। এবং উভয় পক্ষের সঙ্গে মীমাংসা করে বিষয়টি সমাধান করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শেরপুরের সদর থানা এলাকার কুতুবউদ্দিন ও তার নিয়োজিত শ্রমিকরা ইট প্রস্তুত করার জন্য বন্দরের ফুনকুল এলাকার এবিএফ ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধে আবদ্ধ হন। প্রতি বছরের মতো তারা এবছরও বন্দরে ওই ইটভাঁটিতে এসে ইট তৈরি করতে পুরো পরিবার নিয়ে আসেন।
গত ৩১ মার্চ থেকে কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির কারণে ইট তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গত ১ এপ্রিল রাতে ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে তারা ইট তৈরির মজুরি বকেয়া বাবদ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা চান। পরে মালিক পক্ষ উল্টো ৪ লাখ টাকা পাওনা দাবি করেন। পরে মালিক পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদেরকে মারধর করে ইটভাটার একটি ঘরে আটকে রাখেন। শ্রমিকর দুই দিন অনাহারে অবরুদ্ধ থাকার পর ইটভাটা শ্রমিকরা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ঘটনাটি জানালে তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তাদের উদ্ধারের জন্য সহযোগিতা চান। ৯৯৯ এর থেকে কল পেয়ে কামতাল তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ ওই ইটভাটার ঘর থেকে ৪৫ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও শিশুসহ ৬২ জনকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে বন্দর উপজেলার কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে আমরা এবিএফ ইটভাটায় গেলে ওই শ্রমিকরা নিজেরাই বের হয়ে আসে। শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এ সময় শ্রমিকরা মালিক পক্ষের কাছে ৫০ হাজার ৫০০ টাকা পাওয়া আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ প্রথমে ৪ লাখ টাকা দাবি করলে আমরা উভয় পক্ষের কাছে বিস্তারিত শুনে মালিক পক্ষ ১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে মীমাংসা করে বিষয়টি সমাধান করে ওই নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশুদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তারা বুধবার রাতেই ইটভাটা থেকে বাড়ি চলে গেছে।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে টাকার লেনদেনের গড়মিল ছিল। শ্রমিকদের আটকে রাখার কোনো ঘটনা আমরা পাইনি। পুলিশ গিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছে। পরে শ্রমিকরা নিরাপদে যার যার বাড়ি চলে যায়।