ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রীকে আগুনে ঝলসে দেয়ার ঘটনায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরজউদ্দৌলাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (৭ এপ্রিল) মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভার পর গভর্নিং বডির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে ওই ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়। এছাড়া চিকিৎসা সহায়তার জন্য ওই ছাত্রীর পরিবারকে মাদ্রাসা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়।
গত ২৭ মার্চ (বুধবার) ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে মাদ্রাসার পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ওই ছাত্রীকে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী পরীক্ষার হলে যাওয়ার পর এক ছাত্রী এসে তাকে বলে, ‘পাশের চারতলা ভবনের ছাদে তোমার বান্ধবীকে মারধর করা হচ্ছে’। এ কথা শুনে সে সেখানে ছুটে যায়। ছাদে আগে থেকেই অবস্থান করা বোরকা পরা চারজন ওই ছাত্রীকে ঘিরে ধরে এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। এই চাপ প্রত্যাখ্যান করায় সেই চারজন প্রথমে তাকে মারধর করে এবং পরে ওই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ছাত্রীর চিৎকার শুনে সেখানে ছুটে যান পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল রাসেল ও মাদ্রাসার অফিস সহকারী মোস্তফা। পরে তারা ছাত্রীর গায়ে কার্পেট জড়িয়ে আগুন নেভান।
এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ফেনী সদর হাসপাতালে। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেখান থেকে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ছাত্রীর শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গেছে।