চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগরীতে ফেরার সময় এ ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে বাসের চালক ও তার সহকারীকে আসামি করা হয়েছে।
জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, এ ঘটনায় দুপুরে একটি মামলা দায়ের করেছে ছাত্রীর পরিবার। এর পরেই অভিযানে নেমেছে আমাদের টিম। ওই ঘটনায় বাস, অভিযুক্ত বাস চালক ও সহকারীকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে। দ্রুতই আমরা তাদের আটক করতে সমর্থ হবো।
জানা যায়, ১১ এপ্রিল রাত ১০টা ৪২ মিনিটে ভুক্তভোগী ছাত্রী তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দেন। যাতে তিনি লিখেন, ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাটি ঘটে। সেদিন বিকেলে ক্লাস শেষ করে ভুক্তভোগী ছাত্রী আনুমানিক ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ১নং গেট হতে ৩নং বাসে উঠেন। ওই সময় তার এক বন্ধুও ছিল। তবে বাসের পেছন দিকে আসন না থাকায় চালকের সহকারীর সামনের আসনে বসেন তারা। ইতোমধ্যেই তার বন্ধুর কাজ থাকায় জিইসিতে নেমে যায়। বাসটি নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় পৌঁছালে ওই ছাত্রী ছাড়া সকল যাত্রী একে একে নেমে যায়। তিনি নিউমার্কেট মোড়ে নামার জন্য বাসেই অবস্থান করছিলেন। এমন সময় তাকে বাসে একা পেয়ে, হঠাৎ বাসটি গন্তব্য বদল করে স্টেশন রোডের দিকে মোড় নেয় এবং গতি বাড়িয়ে দেয়।
ঘটনার তাৎক্ষণিকতায় কি হচ্ছিল বুঝতে পারছিলেন না ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। তখন তিনি বাস চালককে বাস থামাতে বললে চালকের সহকারী তার দিকে ছুটে আসে এবং ওই ছাত্রীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। এ সময় দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হলে, আত্মরক্ষার্থে ওই ছাত্রী তার ডান হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে চালকের সহকারীকে আঘাত করেন এবং চলন্ত বাস থেকে লাফ দেন। ঘটনার সময় বাসের চালকও ‘ধর মেয়েটারে ধর’ বলে সহকারীকে উৎসাহ যোগাচ্ছিল। পরে এক রিকশা চালকের সাহায্যে শরীরে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ওই ছাত্রী বাসায় ফিরে আসেন।
এ দিকে ঘটনার পরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই শিক্ষার্থী। পরিবারের সদস্যরাও গণমাধ্যমে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন। তবে ঘটনাটি জানার পরই প্রতিবাদে সোচ্চার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বরাত দিয়ে অর্থনীতি বিভাগের সংগঠন ইয়াং ইকোনমিস্ট সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও ওই বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুম জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার শিকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার আরও তিন বান্ধবী একই বাসে এসেছিলেন। তারা দুজন মুরাদপুরে ও একজন জিইসি মোড় নেমে যান। তারাও থানায় এসেছেন। পুলিশ তরীর মালিক সমিতির নেতাদের ডেকে থানায় এনেছেন। পুলিশ আমাদের আন্তরিক সহযোগিতা করেছেন।# সূত্র; জাগোনিউজ।