টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি; বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক দম্পতি। এসময় কয়েজন বখাটে ওই দম্পতিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গৃহবধূর স্বামীকে মারধর করে স্ত্রীকে উঠিয়ে নিয়ে সারারাত ধর্ষণ করে।
গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। এরপর ওইদিন রাত সাড়ে ৩টার দিকে পৌর এলাকার সাবালিয়া চোরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযের বারান্দা থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বিভিন্নস্থনে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- কোদালিয়া এলাকার আলম মিয়ার ছেলে ইউসুফ রানা (২৫), আব্দুল রশীদের ছেলে মো. রবিন (২৫), মো. রবিকুল ইসলামের ছেলে তানজীরুল ইসলাম তাছিন (২২), অষ্টম তলা মোড় এলাকার মৃত মজনু মিয়ার ছেলে মো. মফিজ (২১), একই আল বিরুনীর ছেলে ইব্রাহিম (২০) ও দেওলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২১)।
এ ঘটনায় জড়িত দেওলা এলাকার হাসান সিকদার (২২) ও প্রাইভেটকার চালক উজ্জল (২৫) পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে ফজলু তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ বেড়াতে যান। ওইদিনই তারা দুইজনে কালিহাতী থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় এলেঙ্গা এবং সেখান থেকে বাসে নুতন বাসস্ট্যান্ড নাভানা পেট্রোল পাম্পের সামনে রাত সাড়ে ১০টায় নামেন। সেখান থেকে তারা মির্জাপুরের গোড়াই যাওয়ার জন্য বাস খুঁজছিলেন। এসময় আটজন বখাটে ফজলুকে পাম্পের পেছনে নিয়ে মারপিট করে মোবাইল ও টাকা পয়সা নিয়ে নেয়। স্বামীকে মারপিট করা দেখে স্ত্রী এগিয়ে যান।
তখন ফজলুর স্ত্রীকে প্রথমে ইউসুফ রানা নাভানা পেট্রোল পাম্পের পেছনে ও ডিসি লেকের পাশে মো. রবিন এবং ইউসুফ ধর্ষণ করেন। পরে রবিন মোটরসাইকেলে ফজলুকে উঠিয়ে দেওলা নার্সারির সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এরপর আবার রবিন ওই গৃহবধূকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে সাবালিয়া এলাকার চোরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে গিয়ে আবারও গণধর্ষণ করে। পরে ফজলু তার স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে হাসপাতাল গেটে টহলরত পুলিশকে বিষয়টি জানায়। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার ও রবিনকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
টাঙ্গাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী ফজলু বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতাররা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
নির্যাতিত গৃহবধূকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতলে ভর্তি করে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি দুইজন আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।