তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই ছাত্রী লাক্স সুন্দরীদের সেরা তালিকায় ছিলেন। শুধু তাই নয় পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতেও। ছোটবেলা থেকেই তিনি নাচ-গান আর অভিনয়ে সেরা ছিলেন। এসবের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও তিনি সেরাদের সেরা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তিনি তার সেরাটা দেখিয়েছেন। আর এবার কর্মক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরার পালা। সোহানিয়ে ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি কাজেও যোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, সোহানিয়ার বাবা ডা. আজিজুল হক খান একজন সরকারি কর্মকর্তা। মা সালমা সুলতানা গৃহিণী। ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন সোহানিয়া। ছোটবেলা থেকেই ট্যালেন্টদের তালিকায় নাম ছিল সোহানিয়ার। গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার রয়েছে তার। কাবস্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছেন। এর পাশাপাশি নাচেও তিনি ছিলেন সেরা। বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সফলতার পথ ধরেছেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হতেন। বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ ও এইচএসসিতে কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তুখোড় মেধাবী ওই ছাত্রী ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।
এদিকে নিজেকে মেলে ধরার প্রচেষ্টায় নাম লেখান লাক্স চ্যালেন আই সুন্দরী প্রতিযোগিতায়। সেখানেও তিনি সেরা পারফরম করেছেন। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০১০ এ টপ সেভেনে জায়গা করে নেন। পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতে। তারপর কিছু টিভিসিও করেছেনে ঢাবির ওই সুন্দরী।
অনার্স শেষে স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। শুরু করেন প্রস্তুতি। বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশ বিদেশের ঘটনাগুলো জানতেন। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় এসব বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়। তাছাড়া তিনি যেকোনো বিষয়ে মুক্তহস্তে লিখতে পারতেন। উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থাকায় গণিত আর ইংরেজিতে দক্ষ ছিলেন। প্রতিদিন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা পুরণ করতেন। একঘেয়েঁমি যাতে না আসে এজন্য প্রতিদিন ৩-৪টা বিষয় পড়তেন। তখনকার সহপাঠী বর্তমান স্বামী মেহেদী হাসান ফুয়াদের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতেন। ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস ভাইভাতে কাজে দিয়েছে সোহানিয়ার।
সোহানিয়া মনে করেন, বিসিএস ক্যাডার হতে হলে নিয়মিত পত্রিকা পড়তে হবে। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত। লেখালেখির দক্ষতা বেশ কাজে দেয়। আর বেসিক তৈরি করার জন্য মাধ্যমিকের মৌলিক বইগুলো পড়া যেতে পারে। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পড়াশোনা করলেই সফল হওয়া যায় বিসিএসে।