যশোর শহরের খড়কি এলাকার আমিনুর রহমান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্থানীয় মাওলানা শাহ আব্দুল করিম (রা.) খড়কি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থীকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর প্রতিবাদে বুধবার সকালে শিশুদের অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ গিয়ে ধর্ষককে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী আরা বলেন, খড়কি দক্ষিণপাড়া পীরবাড়ি এলাকার আব্দুল হালিমের ছেলে আমিনুর তিন সন্তানের জনক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় শিশুকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে আসছে দীর্ঘদিন। বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এসব শিশুকে চকলেট, আম, ক্যাটবেরিসহ নানা ধরনের খাবার খাইয়ে এই অপকর্ম করে আসছে আমিনুর।
প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী আরা আরও বলেন, ২৮ এপ্রিল বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় পাঁচ শিশু অনুপস্থিত ছিল। কেন তারা অনুপস্থিত সে বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি জানতে পারি। পরদিন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে বৈঠক করা হয়। সেখানে ভুক্তভোগী তিন মেয়ে আমাদের বিষয়টি জানায়। তারা বলেছে আমিনুর তাদের খাবার কিনে দিয়ে খারাপ কাজ করেছে। তাই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
ফেরদৌসী আরা বলেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আমাকে আহ্বায়ক করে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ কামরুল হাসানসহ চারজনকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বুধবার সকালে আমাদের ওই কমিটির মিটিং চলছিল। ঠিক ওই সময় অভিভাবক, স্থানীয় লোকজন আর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহ মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেব। কিন্তু এরই মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছে। এখন এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দা আনারুল ইসলাম, শুকুর আলী, রেশমা বেগম, কামরুন নাহার, নুরুনাহারসহ অনেকে বলেন, আমিনুর রহমানের তিনটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কয়েকদিন পর সে নানা হবে। আর এমন সময়ে আমাদের বাচ্চা মেয়েদের ধর্ষণ করলো। এই নরপিশাচের আমরা প্রকাশ্যে ফাঁসি চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও তাদের অভিভাবকদের থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে দ্রুতসময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোতোয়ালি থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর সমীর কুমার সরকার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের পরিবারের সদস্যরা থানায় এসেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমিনুর রহমানকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।