দানবীয় রূপ নিয়ে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। বঙ্গোপসাগরে গত ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ‘ফণী’ সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বঙ্গোপসাগরে উষ্ণতার কারণে অনেকটা অস্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট এবং উপকূলে আঘাত হানতে দীর্ঘ সময় নেওয়ায় ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। ১৯৭৬ সালের পর এপ্রিলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে এটি শক্তিশালী বলে জানায় ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ এখন অন্ধ্র প্রদেশের বিশাখাপত্তনম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার এবং ওড়িশার পুরি থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ওড়িশার ৮৭৯টি জায়গা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই সব জায়গায় থেকে প্রায় ১০ লাখ লোক সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।
উদ্ধারকাজ যাতে ভালোভাবে হয় সেজন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনী। বিভিন্ন জায়গায় জাহাজ এবং হেলিকপ্টার নিয়ে আসা হয়েছে।
তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ভারতের অন্ধ্র উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ফণী। সন্ধ্যার পর গতিপথ পাল্টালে শনিবার (৪ মে) সকালে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এ অবস্থায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ‘ফণী’ আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় বাংলাদেশের উপকূলজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১ মে) ছুটির দিনেও সচিবালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে আগামী ৪ মে সকালে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ জানান, ৬ ঘণ্টায় এর গতিপথের পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আঘাত হানার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ।
ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় দেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে ও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।