আসমা আক্তারের বয়স ১৮ বছর। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের নলগরিয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী ও একই উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে। অর্থের অভাবে জীবন প্রদীপ নিভতে বসেছে তার। হার্টের ভাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত দুই মাস ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন আসমা।
দীর্ঘদিন ধরে তার উপর চলা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের শারীরিক-মানসিক নির্যাতনই এই করুণ পরিণতির কারণ। তার পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন চার লাখ টাকা। কিন্তু স্বামী সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রাখায় চিকিৎসার টাকা জোগাড় হচ্ছে না। আর আসমার দরিদ্র বাবার পক্ষে এই টাকার যোগান দেয়া অসম্ভব।
আসমার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নলগরিয়া গ্রামের মৃত মেহের আলীর ছেলে আরব আমিরাত প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে ২০১৫ সালে ভিটিদাউদপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের মেয়ে আসমা আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর কুদ্দুস প্রবাসে ফিরে যান। এরপর থেকেই আসমার উপর শুরু হয় মানসিক নির্যাতন।
মাঝে-মধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর শারীরিক নির্যাতনও চালাতো। যৌতুকের জেরে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আসমার উপর চলতো এ নির্যাতন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি আসমা অসুস্থ হতে পারবে না, আর অসুস্থ হলেও ডাক্তার-ওষুধের খরচ তার পরিবারকে বহন করতে হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের সময় কোনো যৌতুক দেয়ার কথা না থাকলেও বিয়ের পর কুদ্দুসের একটি ঘর দুই লাখ টাকা খরচ করে আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে দেয়া হয় আসমার পরিবারের পক্ষ থেকে।
কিন্তু দীর্ঘদিনের নির্যাতনের কারণে আসমা অসুস্থ হয়ে পড়ায় হঠাৎ একদিন তার বড় ভাইন মহিন উদ্দিনকে ফোন করে কুদ্দুস জানায় তিনি আসমার সঙ্গে আর সংসার করবেন না। মহিন তাকে বুঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি আসমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে বলেন।
পরবর্তীতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে আসমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পারমর্শ দেন। ঢাকার চিকিৎসকের পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানা যায় আসমার হার্টের ভাল্ব নষ্ট। পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার জন্য চার লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু আসমার কৃষক বাবার পক্ষে এই টাকার যোগান দেয়া কিছুতেই সম্ভব না। বর্তমানে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুণছে আসমা। তার চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
আসমার বড় ভাই মহিন উদ্দিন জানান, আমি পড়াশুনা করি। আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। বাবা যতটুকু পেরেছেন চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু চার লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসা করানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। অল্প বয়সেই যেন আমার বোনের জীবন প্রদীপ নিভে না যায় সেজন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি। সবাই মিলে পাশে দাঁড়ালে আমার বোন বেঁচে যাবে।
সাহায্যের জন্য আসমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের ফোন নম্বর- ০১৭৫৪২৬১২৪২