ফেনীতে বৃদ্ধ ভিক্ষুকের সাড়ে ১৯ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। টাকার জন্য কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন বৃদ্ধ লাতু মিয়া।
ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার নিত্য যাতায়াতকারীদের কাছে চেনামুখ লাতু মিয়া। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য কঙ্কাল সদৃশ্য এই বৃদ্ধ ভিক্ষা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।
ভিক্ষা করে রাতে ওই এলাকার বিভিন্ন দোকানের সামনেই ঘুমিয়ে পড়েন।
ভিক্ষুক লাতু মিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম দিতে ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে অজ্ঞাত দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী লাতু মিয়ার কাছে গিয়ে ‘টাইগার ড্রিংকস’ খেতে দেয়। কিন্তু লাতু মিয়া খেতে অনীহা দেখালে ছিনতাইকারীদের একজন তাকে থাপ্পর মারার ভয় দেখায় এবং এ সময় অপর ছিনতাইকারী তার ব্যাগে থাকা সাড়ে ১৯ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, “তার দোকান থেকে টাইগার নিয়ে ছিনতাইকারীরা ওই বৃদ্ধকে খাওনোর চেষ্টা করে এবং কৌশলে তার কাছ থেকে সাড়ে ১৯ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। ছিনতাইকারীরা হাসপাতাল মোড় এলাকার অনেকেরই চেনাজানা।
বৃদ্ধ লাতু মিয়ার বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। ফেনীতে লাতু মিয়ার আপনজন বলতে কেউ নেই। তাই দুবেলা-দুমুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য এ বয়সেও তিনি ভিক্ষা করে সাড়ে ১৯ হাজার টাকা জমা করে তার সঙ্গে রেখে দেন।
স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করেন, ওই ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেননি।
আরও জানান, ওই স্থানে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা নতুন নয়। তবে মঙ্গলবার রাতে ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাই করে একটি অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
সিএনজি চালক আবদুর রহিম বলেন, “এমন অভিনব কায়দায় ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ”
ফেনী মডেল থানার (ওসি) তদন্ত সাজেদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, “বিষয়টি তিনি অবহিত হয়েছেন। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”