এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দন ইউনিয়নে চতুরা, রামহরি, মন্দির মৌজায় তিস্তা নদীর প্রবল ভাঙ্গনে গত কয়েকদিনে প্রায় দেড় হাজার পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও শত শত একর আবাদি জমি, গাছ-পালা, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গনে বিলনি হয়েছে।
বর্তমানে এ ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। চতুরা মৌজায় ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে কালিরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি বাজার। যেভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে তাতে যে কোন মহুর্তে এ স্কুল ও বাজারটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই এ ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় ভুট্রা, পাট, বাদাম সহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত কৃষকেরা অসময়ে কেটে ফেলছে। এতে লোকসান গুনছে কৃষকেরা। গত দু’দিন হতে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করায় ভাঙ্গনের রূপ আরো ভয়াবহ হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে এলাকারবাসী জরিনা, আমেনা, জলিল, ইদ্রিস, মিলন সহ অনেকে সাথে কথা হলে তারা জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে তিস্তা নদী আমাদের এই বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায় ভাঙ্গছে। এ এলাকার মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে অনেকে এখন নিঃস্ব। অনেকের মাথা গোজার ঠাই পর্যন্ত নেই। প্রতি বছর ভাঙ্গনের সময় এ ভাঙ্গন রোধে বিভিন্ন মহলের কাছে জানিয়ে এখন পর্যন্ত তিস্তা নদী শাষন বা এলাকার মানুষগুলোকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ভাঙ্গন ঠেকাতে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
সমাজ সেবক এরশাদুল ইসলাম জানান, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি মৌজা, চতুরা মৌজা ও মন্দির মৌজায় এ ৩টি মৌজার অসংখ্য বাড়ী-ঘর, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিস্তা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। দীর্ঘ ৩০ বছরের ভাঙ্গনে অনেকের এখন মাথা গোজার ঠাই নেই। আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আকুল আবেদন জানাই এ ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
বিদ্যানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে শত শত একর আবাদি জমি, বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। দেখার কেউ নেই।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিপাতের কারনে নদ-নদীগুলোতে কিছু পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে কিছু কিছু এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে রাজাহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ ভাঙ্গন রোধে বিভিন্ন প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।