ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির পর এবার খুনিদের নৃশংসতার নির্মম বলি হয়ে জীবন দিতে হলো নরসিংদীর কলেজ ছাত্রী ফুলনকে। বুধবার (২৬ জুন) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১৩দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় তার। এঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার সংস্থা ও এনজিও সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটি । আর দ্রুত খুনিদের গ্রেফতার ও বিচারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংস্থাটি।
গত ১৩ই জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদী পৌর শহরের বীরপুর এলাকায় সন্ধ্যার পরে দোকান থেকে কেক কিনে বাসায় ফিরছিলেন কলেজছাত্রী ফুলন বর্মণ। এ সময় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় ৩ জন দুর্বৃত্ত। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, তার পুড়ার ক্ষতটা ছিলো অনেক গভীর, কেরোসিনের পুড়া অনেক গভীর হয়। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু ইনফেকশন হয়ে যাওয়ায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হলো না।
ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করে। এদের মধ্যে আটক রাজু সূত্রধর নামে এক সহযোগী আদালতে জবানবন্দিতে জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ফুলন বর্মণকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা চেষ্টা করে ফুপাতে ভাই ভবতোষ বর্মণ। যদিও এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের রয়েছে ভিন্নমত।
নিহত ফুলন মৃত্যুর আগে জড়িতদের নাম বলে গিয়েছিলেন বলে দাবী করেছেন মা।
ফুলনের মা বলেন, আমাদের আগে হুমকি দিতো আমদের বাড়ি ঘর পুড়বে, পুলিশে দিবে, আমাদের জেলে দিবে। আমার মেয়ে তাদের কথা বলে গেছে।
যারাই জড়িত থাকুক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানান স্বজনেরা।
সৃষ্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান আনোয়ার-ই-তাসলিমা বলেন, নুসরাতের পর ফুলনকে কেন আগুনে পুড়ে মরতে হল। সমাজে সিরাজদের গোড়া নির্মূল করতে। তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে যেন কেউ আর কোনদিন এমন নৃশংস অপরাধ করার সাহস না পায়। ফুলন হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংস্থার চেয়ারম্যান।