শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
নড়াইলের লোহাগড়ায় মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে সিজার করার সময় ডাক্তারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মৃত্যুর পর পরই ওই ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তার প্রসূতির স্বামীকে মারধোর করে ক্লিনিকে তালা মেরে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই ক্লিনিক প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখে। পরে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কোটাকোল ইউপির করগাতী গ্রামের দিনমজুর কামাল হোসেনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী বিলকিস বেগমকে (২৫) শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিজার করার জন্য পৌর এলাকার মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে নিয়ে আসে।
ওই ক্লিনিকের মালিক ওহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সিজার বাবদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা চুক্তির পর দুপুর ২টার দিকে ডাক্তার তাজরুল ইসলাম তাজ কোনো অজ্ঞানের ডাক্তার ছাড়াই অদক্ষ নার্সকে সঙ্গে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে সিজারের কাজ শুরু করেন।
প্রসূতির শরীরে ইনজেকশন ও স্যালাইন পুশ করার পর অস্ত্রোপচার শুরু করলে অপারেশন থিয়েটারেই প্রসূতির মৃত্যু ঘটে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর ও ডাক্তার তাজ দ্রুত রোগীকে অন্যত্র পাঠানোর কথা বলেন।
এ সময় প্রসূতির স্বামী ও আত্বীয়-স্বজনরা রোগীর কী অবস্থা জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তার স্বামী কামাল হোসেনকে মারধোর করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে রোগীকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে ক্লিনিক তালা মেরে পালিয়ে যায়।
এদিকে রোগীকে নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে প্রসূতির লাশ পুনরায় ওই ক্লিনিকে নিয়ে গেলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক প্রায় ৩ ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখে। পরে লোহাগড়া থানার ওসি মোকাররম হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রসূতির স্বামী কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। অপারেশন থিয়েটার থেকে আমার স্ত্রীকে বের করে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর সময় আমি বিষয়টি জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক, ডাক্তার ও নার্স আমাকে মারধোর করে। আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডা. তাজরুল ইসলাম তাজ মোবাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে যুগান্তরকে বলেন, অপারেশন থিয়েটারে সিজার কাজ শুরু করার সময় রোগী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে।
তবে অভিযুক্ত ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর পালিয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
লোহাগড়া থানার ওসি মোকাররম হোসেন জানান, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র; যুগান্তর
