সুন্নতে খৎনার ঘটনায় পরিবারের বিনা অনুমতিতে শিশু আয়ানের পুরো শরীরে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ ও শিশুটিরর মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে কারও মৃত্যু বা অন্য যে কোনো ধরনের ক্ষতি সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্স্থা সৃস্টি হিউম্যান রাইটস সোসাইটি। স্শেই সাথে আয়ান আহমেদের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সনদ বাতিল এবং ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান মানবাধিকার সংস্থাটির চেয়ারম্যান আনোয়ার-ই- তাসলিমা প্রথা।
১০ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
সংস্থাটির চেয়ারম্যান আনোয়ার-ই- তাসলিমা প্রথা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, আমরা পরিবারের বরাতে জেনেছি গত ৩১ ডিসেম্বর সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করানোর জন্য আনা হয় আয়ানকে। সেদিন বেলা ৯টায় খতনা করার জন্য তাকে পুরোপুরি অজ্ঞান করা হয়। খতনা করার পর ১১টায়ও জ্ঞান না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয় আয়ানকে।রোববার রাতে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। আয়ানের স্বজনরা জানিয়েছেন, আংশিক অচেতন করে খতনা করানোর কথা থাকলেও চিকিৎসকরা আয়ানকে পুরোপুরি অজ্ঞান করেছিলেন। অথচ ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে দেওয়া আয়ানের মৃত্যু সনদে ‘কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফেইলিওর, মাল্টিঅর্গান ফেইলিওর এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ কে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখান হয়েছে। তারা আরও জানায়, খৎনা করাতে সাধারণত লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয়। কিন্তু তাকে পুরো শরীর অ্যানেসথেসিয়া দেন চিকিৎসকরা। পুরো শরীর অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার সময় তাদের অনুমতি নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি আয়ানের।
আনোয়ার-ই- তাসলিমা প্রথা বিবৃতিতে বলেন, চিকিৎসকের অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার কারণে কারও মৃত্যু বা অন্য কোনো ধরনের ক্ষতি মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবহেলা, জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি এবং একই সঙ্গে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।
মৃত্যুর ব্যাপারে আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ চিকিৎসকদের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, এতদিন তারা মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তালবাহানা করছিল। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। বাবা শামীম আহমেদ আরও বলেন, গত ৩১ ডিসেম্বর খৎনা করানোর পর থেকেই বাচ্চার আর সেন্স ফেরেনি। তারা ঠিকমত কোনো তথ্যও দেয়নি। এখন মৃত ঘোষণা করল।
অভিযোগ অনুযায়ী, সুন্নতে খৎনার ঘটনায় পরিবারের বিনা অনুমতিতে ভুক্তভোগী শিশুর পুরো শরীরে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ এবং এর ফলে শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক।