ads
শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন

কার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি?

সৃষ্টিবার্তা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৫৫ বার পঠিত
প্রতীকী ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই শেরপুরে চলছে চাঁদাবাজদের গোপন দৌড়ঝাঁপ। নানা কৌশলে নীরব চাঁদাবাজির বিষয়টি ফুটপাতের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস-আদালত এমনকি ড্রয়িংরুম পর্যন্ত সর্বত্র মানুষের মুখে মুখে চাউর। বিভিন্ন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিগত ক্ষমতাসীন দলের নেতা-পাতি নেতারও যেন নিস্তার নেই চাঁদাবাজদের হাত থেকে ফসকে যাওয়ার, এমনই আলোচনায় চলছে।

হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে লাখ, আবার লাখের গণ্ডি পেরিয়েও গেছে চাঁদার হার, এমন কথাও বাতাসে ঘুরে বেরোচ্ছে। সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন, কার ছত্রছায়ায় চলছে চাঁদাবাজি।

অনুসন্ধানে করে জানা যায়, মামলা-হামালার ভয় দেখিয়ে নীরবে-নিভৃতে চলছে এসব চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজির বিষয়টি শুধুমাত্র শহরেই সীমাবদ্ধ নয়, শহরের গণ্ডি পেড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামে-গঞ্জে, হাট-বাজারেও। জান-মাল রক্ষায় চাহিদামত অর্থ পরিশোধ করেও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অর্থের বিনিময়ে নিজেদের রক্ষা করতে মরিয়া। বিগত বছরগুলোতে নিজেদের কুকর্ম ঢাকতে প্রভাবশালী এসব চাঁদাবাজদের ম্যানেজ করেই ফিরছেন জনসম্মুখে। শুধু তাই নয়, পালিয়ে যাওয়া হাসিনা সরকারের আমলে ছাত্রজনতার আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতাকারী চিহ্নিত বেশ কয়েকজন নেতাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান আইনি পদক্ষেপ না নেয়ার বিষয়টি আড়চোখে দেখছেন সাধারণ মানুষ। ৫ আগস্টের পর থেকে চাঁদাবাজরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তাদের ভয়ে আর আতঙ্কে স্পষ্ট করে কারও নাম উচ্চারণ করার সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। সাহসী কেউ কেউ সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে প্রভাবশালীদের ইঙ্গিত করে কমেন্টস করে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করছেন। বিষয়টি নিয়ে কমেন্টসকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা চাঁদাবাজদের নাম ঠিকানা জানতে দেয়ালে কান পেতে শোনার পরামর্শ দেন। চাঁদাবাজির শিকার হয়েছেন এমন ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তারা কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে আবার বলছেন, কার বিচার, কাকে দিব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনও ছন্দে ফেরেনি। কোথায় অভিযোগ করলে প্রতিকার পাওয়া যাবে তারও জানা নেই। আর অভিযোগ করলে বিপদ আরও বাড়তে পারে, তাই বাঁচার জন্য অনেকেই চুপচাপ থাকছেন।

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বারবার আলোচনা করছেন। কিন্তু চাঁদাটা নিচ্ছে কে, কার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজি; প্রশ্ন বারবার ঘুরছে।

ছাত্র আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা নেতারা বলছেন, এই চাঁদাবাজরা হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি করেন তারা।

দলীয় আলোচনায় বিএনপি নেতারাও চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বহিষ্কারের কথাও বলছেন গলা উঁচিয়ে। শেরপুরে নীরব চাঁদাবাজির বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এসব কর্মকাণ্ডকে দুঃখজনক বলছেন। তারা বলছেন, এমন কাজে ছাত্র জনতার অর্জিত সফলতাকে প্রশ্নের মুখোমুখি করছে। তাই চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে তালিকা সেনাবাহিনীর কাছে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান, জেলায় কর্মরত গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাঠে সক্রিয় চাঁদাবাজদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। আমরা প্রত্যেকটি চাঁদাবাজির ঘটনার মূলহোতাসহ মাঠ পর্যায়ের লোকজনের প্রতি কড়া নজরদারি করছি। আইনের শাসন স্বাভাবিক গতিতে ফিরলেই চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

এসব চাঁদাবাজির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শেরপুরের সমাজসেবক ও মানবাধিকার কর্মী রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, শেরপুরে যেভাবে নীরবে চাঁদাবাজি চলছে তাতে সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে তাদের দলের নেতাকর্মীরা সবাই পলাতক রয়েছে। এমন অবস্থায় শেরপুরের বিএনপি নেতাকর্মীদের আমি বলেছি আপনারা এই চাঁদাবাজি বন্ধ করুন। আপনারা যদি এর সঙ্গে জড়িত না থাকেন তাহলে থানা মোড়ে দাঁড়িয়ে এর প্রতিবাদ করুন। কারা করছে চাঁদাবাজি তার খোঁজখবর নিয়ে তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দিন। আমার তো কোন অস্ত্র নেই চাঁদাবাজি প্রতিরোধ করার। আমি এই ৮২ বছর বয়সেও যেটা করতে পারি, সেটা হচ্ছে এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অনশন কর্মসূচি।

শেরপুর জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী গণমাধ্যমকে মুঠোফোনে বলেন, আমিও শুনেছি নামে-বেনামে শেরপুরে চাঁদাবাজি হচ্ছে। যেহেতু পুলিশ প্রশাসন নেই, আমি একা মাঠে থেকে কিছু লোক নিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অনেকের কাছ থেকে নেয়া টাকা পয়সা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদা চাইতে যাবে তাদের হাত-পা বেঁধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অথবা আমার কাছে পাঠানোর অনুরোধ করেছি। সবাইকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে আমার ফোন নাম্বার দিয়েছি। কিন্তু কেউ যদি গোপনে কিছু করে সেটা তো আমি কিছু করতে পারবো না। যদি কেউ প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে, আপনারা যদি প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে অবশ্যই আমি সেটার বিচার করবো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপিতে যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং দখলবাজির অভিযোগ আসবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা এগুলোতে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাসহ আহনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, আগে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ চাঁদাবাজি করতো, এখন নব্য চাঁদাবাজ সেটআপ বসে গেছে। এরাও আওয়ামী লীগের মতো চাঁদাবাজি করছে। এদের সরাতে হবে। এদের অস্তিত্ব থাকলে রাষ্ট্র সংস্কার করা যাবে না।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৩৯
  • ১১:৫১
  • ১৬:০৬
  • ১৭:৪৯
  • ১৯:০২
  • ৫:৪৯
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102